শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৩ ০০:০০ টা
গণকবর ৩২ জনকে

টেকনাফে আরও সাত লাশ

টেকনাফ উপকূল থেকে উদ্ধার হাওয়া রোহিঙ্গা মুসলিম নাগরিকদের মৃতদেহ গ্রহণ করেনি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। পচন ধরে যাওয়ায় ও আত্দীয়স্বজনের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে না এ অজুহাতে এসব মৃতদেহ গ্রহণ করেনি নাসাকা। তাই বাংলাদেশের টেকনাফেই হতভাগা মানুষদের গণকবর দেওয়া হয়। অপরদিকে টেকনাফ উপকূল থেকে আরও সাতজন মিয়ানমার নাগরিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে সাগর উপকূলে উদ্ধারকৃত লাশের সংখ্যা দাঁড়াল ৩২ জনে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ২৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এদিকে গতকাল বিকাল ৩টায় উদ্ধার হাওয়া মৃতদেহ টেকনাফ ঈদগাও ময়দান-সংলগ্ন কবরস্থানে গণকবর দেওয়া হয়েছে। এর আগে টেকনাফ কেন্দ্রীয় ময়দানে পৃথক দুটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় রোহিঙ্গা শরণার্থীবিষয়ক কমিশনার (যুগ্ম সচিব) ফিরোজ সালাহ উদ্দিন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, টেকনাফ ৪২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল জাহিদ হাসানসহ স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা অংশ নেন। জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন জানিয়েছেন, গভীর সাগরে ভেসে আসা মিয়ানমারের এই মুসলিম নাগরিকদের যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় বাংলাদেশের মাটিতে দাফন করা হয়েছে। এসব মিয়ানমার নাগরিকের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মিয়ানমার সরকারকে জানানো হয়েছে। টেকনাফের ৪২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল জাহিদ হাসান জানিয়েছেন, মিয়ানমারের উদ্ধার হাওয়া এই ভাসমান নাগরিকদের বিষয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ও শুক্রবার সকালে নাসাকা কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। নাসাকা কর্তৃপক্ষ এসব মৃতদেহ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমান বলে স্বীকার করেছেন। মৃতদেহগুলো প্রায় ছয় দিন আগের হাওয়ায় পচন ধরেছে। এসব মৃতদেহের আত্মীয়স্বজনের বাড়িঘর অনেক দূরে। প্রায় আকিয়াবের কাছাকাছি হওয়ায় এই মৃতদেহগুলো বাংলাদেশ থেকে গ্রহণ করে আত্দীয়স্বজনের কাছে পাঠানো সম্ভব নয়। তাই নাসাকা কর্তৃপক্ষ লাশ গ্রহণ করেনি। বিজিবির অধিনায়ক আরও জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা এই মুসলিম নাগরিকদের বাংলাদেশে দাফন করার ব্যাপারে নাসাকা কর্তৃপক্ষ সম্মতি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় মহাসেন থেকে বাঁচতে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য নৌকায় উঠে এসব রোহিঙ্গা মুসলমান। গত সোমবার মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে পোউকতাও এলাকায় দুই শতাধিক রোহিঙ্গাকে বহনকারী নৌকা নদীতে ডুবে যায়। এদিকে ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের কারণে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় টেকনাফ-মংডু সীমান্ত বাণিজ্যের ব্যবসায়ীদের বর্ডার পাস ও ট্রানজিট পাস তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এদিকে পাস নিয়ে আসা মিয়ানমারের ৫২ জন নাগরিক বাংলাদেশে আটকা পড়েছে।

সর্বশেষ খবর