শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা

শত কোটি টাকা নিয়ে উধাও মাল্টিপারপাস কোম্পানি

চট্টগ্রামে গ্রাহকের শত কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে ফারইস্ট ইসলামী কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. (এফআইসিএল) নামে একটি মাল্টিপারপাস কোম্পানি। এ মাল্টিপারপাস কোম্পানির প্রতারণার প্রতিকার চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা প্রশাসনের ঊধর্্বতন মহলে বার বার ধরনা দিলেও মিলছে না কোনো সুফল। উল্টো প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তার পরোক্ষ সহায়তায় পার পেয়ে যাচ্ছে গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আত্দসাৎকারী কোম্পানি ও এর কর্মকর্তারা।

এফআইসিএল মাল্টিপারপাসের প্রতারণার শিকার গ্রাহকরা এরই মধ্যে গঠন করেছে 'এফআইসিএল গ্রাহক কল্যাণ পরিষদ' নামে একটি সংগঠন। এ সংগঠনের সভাপতি ইসমাইল খান বলেন, 'এফআইসিএল চট্টগ্রামের আটটি শাখার মাধ্যমে তিন হাজারের অধিক বিনিয়োগকারী সংগ্রহ করে। তারা বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি টাকা আত্দসাৎ করে পালিয়ে গেছে। প্রতারণার প্রতিকার চেয়ে মন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনারসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অসংখ্য অভিযোগ করা হলেও মিলছে না কোনো প্রতিকার।' সাধারণ গ্রাহকদের অভিযোগের বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, 'এফআইসিএলের প্রতারণার বিষয়ে কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি।'

জানা যায়, ২০০৭ সালের শুরুতে নগরীর পাহাড়তলী এলাকায় একটি শাখা খুলে চট্টগ্রামে এফআইসিএল কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তীতে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ, ইপিজেড, নিউ মার্কেট, ষোল শহর ২ নং গেট, বহদ্দারহাট, হালিশহর এবং সীতাকুণ্ডসহ চট্টগ্রামে মোট আটটি শাখা খোলে। এ শাখাগুলোতে ক্ষুদ্র ও সঞ্চয় বিনিয়োগ প্রকল্প, নির্ধারিত মেয়াদে জমা, মাসিক লভ্যাংশ ভিত্তিতে জমা, মাসিক সঞ্চয়, রিয়েল এস্টেট, এগ্রো প্রজেক্ট, ওষুধ কোম্পানি, ফিলিং স্টেশন, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, অটো রাইস মিল, হাসপাতালসহ এফআইসিএল গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দেওয়ার কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ শুরু করে। গ্রাহকদের বিপুল মুনাফার লোভ দেখানোয় সাধারণ মানুষ হুমড়ে পড়ে এ প্রতিষ্ঠানের দিকে। কয়েক বছরের মধ্যে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যায়। বিনিয়োগের পরিমাণও ছাড়িয়ে যায় শত কোটি টাকার বেশি।

এফআইসিএলের প্রতারণার শিকার মো. ফরহাদ নামে এক বিনিয়োগকারী বলেন, বেশি মুনাফার আশায় মাসিক বিনিয়োগ প্রকল্পে এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করি। শুরুতে প্রতি মাসে ভালো অংকের মুনাফা দেওয়ায় আত্দীয়স্বজনদের কাছ থেকে ধার করে আরও ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করি। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হঠাৎ মুনাফা দেওয়া বন্ধ করে দেয় এফআইসিএল। লভ্যাংশ বন্ধ করায় আমানতের টাকা ফেরত চেয়ে প্রথমে মৌখিক, পরে লিখিত আবেদন করি। টাকা ফেরত দিতে এফআইসিএল কর্তৃপক্ষ নানা রকম তালবাহানা শুরু করে। পরে শাখাগুলো বন্ধ করে দিয়ে পালিয়ে যায় এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।

গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার বিষয়ে জানতে এফআইসিএল গ্রুপের প্রকল্প পরিচালক শাহাদাত হোসেন ভুঁইয়ার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সর্বশেষ খবর