শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৩ ০০:০০ টা
এমডি নিয়োগের ব্যাখ্যা চায় বাংলাদেশ ব্যাংক

গ্রামীণ ব্যাংকের নতুন আইন নিয়ে জটিলতায় সরকার

গ্রামীণ ব্যাংকের জন্য নতুন আইন করতে গিয়ে জটিলতায় পড়েছে সরকার। প্রতিষ্ঠানটিতে সরকারের প্রভাব বাড়াতে গিয়ে সময় সময় অধ্যাদেশে (১৯৮৩) যে পরিবর্তন আনা হয়েছে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে সেটি নিয়েই। এ পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানটিতে এমডি নিয়োগসহ বেশ কিছু ধারা স্পষ্ট করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সূত্র জানায়, এমডি নিয়োগে প্রভাব বাড়ানোর জন্য ২০১২ সালে মূল অধ্যাদেশটি সংশোধন করে বর্তমান সরকার। তাড়াহুড়া করে যে সংশোধনী আনা হয়েছে এখন আইন করতে গিয়ে সেটি নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রস্তাবিত আইন সম্পর্কে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মতামত পাঠানো হয়েছে। সংস্থাটির মতামত হচ্ছে, 'এমডি নিয়োগের ক্ষেত্রে বাছাই কমিটির সুপারিশকৃত প্যানেল হতে তিনজন না একজন প্রার্থীর নাম অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হবে তা স্পষ্ট করা প্রয়োজন।' এমডি নিয়োগে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, 'ব্যাংকের একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকবেন যিনি উপধারা (২) এর বিধান অনুসারে বাছাই কমিটির সুপারিশকৃত তিনজন প্রার্থীর প্যানেল হতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদনক্রমে বোর্ড কর্তৃক নিয়োজিত হবেন।' কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানতে চাইছে, বাছাই কমিটি কি তিনজন প্রার্থীর নাকি একজনের নাম পাঠাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, বাছাই কমিটি যদি তিনজনের নাম দেয়, তবে তার মধ্যে থেকে এমডি হিসেবে একজনকে বেছে নেওয়ার দায়িত্ব বর্তাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর। কিন্তু আইন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুধু এমডি নিয়োগে পূর্বানুমোদন দিতে পারে। এর বেশি কিছু করতে পারে না। আবার যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে তিনজন থেকে একজনকে বেছে নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়, তবে আইনে সেটি স্পষ্ট করতে হবে।

এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের নতুন আইন করতে গিয়ে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। আইনের যে ধারাগুলো নিয়ে সমস্যা রয়েছে সেসব ব্যাপারে আমরা বিভিন্ন সংস্থার মতামত চেয়েছি। তাদের মতামত পাওয়ার পর আবারও বৈঠক করব। এসব বৈঠকের মধ্য দিয়েই আইনি জটিলতাগুলো দূর করা যাবে বলে মনে করেন ওই কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ হতো পরিচালনা পর্ষদের মাধ্যমে। পরিচালনা পর্ষদ এমডি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হতো। কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. ইউনূসের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের ধরে ওই বিধানটি বদলে ফেলে সরকার। এ লক্ষ্যে গত বছর গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর সংশোধনী আনা হয়। ২০১২ সালে সংশোধিত ওই অধ্যাদেশ অনুযায়ী বোর্ডের ক্ষমতা ক্ষুণ্ন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন নিয়ে সরকার গঠিত বাছাই কমিটির মাধ্যমে এমডি নিয়োগের বিধান করা হয়। এখন গ্রামীণ ব্যাংকের মূল অধ্যাদেশ পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠানটির জন্য নতুন যে আইন করা হচ্ছে সেখানে এ ধারাটি নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা।

সর্বশেষ খবর