বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

রামুতে নবনির্মিত ১২ বিহার উদ্বোধন

কক্সবাজারের রামুতে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ধ্বংস হওয়া ১০টি বৌদ্ধ বিহার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারযোগে রামু রাবারবাগান-সংলগ্ন হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন। সেখান থেকে গাড়িযোগে রামু উত্তর মিঠাছড়ির বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বীর বাহাদুর এমপি ও ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ করুণা শ্রীভিক্ষু। তাদের সঙ্গে ছিলেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া ও ১৭ ইসিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুলফিকার রহমান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ সময় ভাবনা কেন্দ্রে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মোজেনা, ভারতের রাষ্ট্রদূত পঙ্কজ শরণ, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার নিকোলোয়েভ, নৌবাহিনীর প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল জহিরুদ্দীন আহমদ। ভাবনা কেন্দ্রে পোঁছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০০ ফুট দৈর্ঘ্য মূর্তি ও ভাবনা কেন্দ্র ঘুরে দেখেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে বিহার নির্মাণের একটি ভিডিওচিত্র দেখান সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এরপর প্রধানমন্ত্রী সেখানে স্থাপিত ভাবনা কেন্দ্রসহ ১০টি বৌদ্ধ বিহারের ফলক উন্মোচন করেন। উদ্বোধন হওয়া অন্য বিহার হলো রামু উপজেলার লালচিং বিহার, সাদা চিং বিহার, আর্য্যবংশ বৌদ্ধ বিহার, অপর্ণাচরণ বৌদ্ধ বিহার, উচাই সেন বিহার, তেজবন বৌদ্ধ বিহার, বন বিহার, অজান্তা বৌদ্ধ বিহার ও বিবেকারাম বৌদ্ধ বিহার। বেলা ১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী ভাবনা কেন্দ্র থেকে মৈত্রী বিহারে যান। মৈত্রী বিহার উদ্বোধন শেষে সেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রী সেনাসদস্যদের উদ্দেশে বলেন, আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার কারণে স্বল্পসময়ের মধ্যে এসব বিহারের কাজ সমাপ্ত করা সম্ভব হয়েছে। এ জন্য তিনি সেনাসদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দেশ ও জাতির কল্যাণে তাদের ভূমিকা রয়েছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী যান সীমা বিহারে। সীমা বিহার উদ্বোধন শেষে এর সম্মেলন কক্ষে বৌদ্ধধর্মীয় নেতাসহ সুধী সমাবেশে মিলিত হন। ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন বৌদ্ধধর্মীয় নেতা সংঘরাজ ধর্ম সেন মহাথের, রামু সীমা বিহারের অধ্যক্ষ সত্যপ্রিয় মহাথের। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বৌদ্ধ বিহারের স্থায়ী নিরাপত্তা বিধানের জন্য প্রশাসনের বিশেষ সেল বসানোর দাবি জানান। একই সঙ্গে ২৯ সেপ্টেম্বরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাদের পাশে থাকার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করতে তার সরকার সব উদ্যোগ নেবে।

তিনি বলেন, একসময় সপরিবার রামু ভ্রমণে এসে তিনি মুগ্ধ হয়েছিলেন। এখন নতুন নকশা ও শৈলীতে বিহার নির্মাণ হয়েছে। এতে পর্যটনশিল্পের বিকাশ হবে। তিনি কঙ্বাজারের পর্যটনশিল্পের বিকাশে আরও উন্নয়নমূলক কাজ করার ঘোষণা দেন। এদিকে, নবনির্মিত বিহার উদ্বোধন ও প্রধানমন্ত্রীর আগমনে আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। তারা চাইছেন আবারও নতুন করে নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে এগিয়ে যেতে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, মহাজোট সরকার অল্প সময়ের মধ্যে বিহার ও ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর সংস্কার করে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এরপর বেলা ২টার দিকে প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারযোগে ইনানী রেস্ট হাউসে যান। সেখানে বিশ্রাম শেষে আড়াইটায় হেলিকপ্টারযোগে উখিয়ায় যান। উখিয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণদান ছাড়াও সমাবেশস্থলে কঙ্বাজার জেলার অর্ধ শতাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বিকাল ৫টায় হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশে উখিয়া ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

 

সর্বশেষ খবর