শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

বিশ্বমানের সেনাবাহিনী গড়া হবে

কম্পোজিট ব্রিগেড উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

বিশ্বমানের সেনাবাহিনী গড়া হবে

পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ ও নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনীতে ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড গঠন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল পতাকা উত্তোলন করে এ ব্রিগেডের উদ্বোধন করেন। পরে তিনি ঢাকা সেনানিবাসে প্রশিক্ষণ মাঠে সেনা সদস্যদের দরবারে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় বলেন, 'সেনাবাহিনীকে বিশ্বমানের এবং শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।' খবর বাসসের।
শেখ হাসিনা বলেন, 'একটি দক্ষ, সুশৃঙ্খল, সুসজ্জিত ও শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার ব্যাপারে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। সশস্ত্র বাহিনী দেশের ঐক্য ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে সম্ভব সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।' 
প্রধানমন্ত্রী এর আগে সেনানিবাসে অ্যাডহক আর্মি এভিয়েশন গ্রুপের হ্যাংগারে এক অনুষ্ঠানে ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেডের পতাকা উত্তোলন করেন। ২০ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন, ৫৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং ৩৪ বাংলাদেশ আর্টিলারি রেজিমেন্টকে নিয়ে এ ব্রিগেড গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ৫৮ ইস্ট বেঙ্গলের পতাকা, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী ৩৪ বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের পতাকা এবং সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভুঁইয়া ২০ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়নের পতাকা উত্তোলন করেন। মন্ত্রিসভার সদস্য, নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল এম ফরিদ হাবিব, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল মোহাম্মদ এনামুল বারী, সংসদ সদস্যসহ পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ফোর্সেস গোল-২০০৩-এর আলোকে সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য নতুন ইনফ্যান্ট্রি, আর্মার, আর্টিলারি, বিমান প্রতিরক্ষা ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি এবং একে বিশ্বমানের আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে অত্যাধুনিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করা হচ্ছে। বিদেশে সেনা সদস্যের চিকিৎসার জন্য অনুদান দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা করা হয়েছে।' তিনি বলেন, 'সরকার সিপাহি থেকে মেজর পর্যন্ত সেনাবাহিনীর সদস্যদের চাকরির বয়সসীমা দুই বছর বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেসিওকে প্রথম শ্রেণীর এবং সার্জেন্টকে দ্বিতীয় শ্রেণীর পদমর্যাদায় উন্নীত করারও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।' শেখ হাসিনা বলেন, 'প্রশিক্ষণ কাজে ব্যবহারের জন্য সেনাবাহিনীকে চর কেরিংয়ে ৯ হাজার একর জমি বরাদ্দের জন্য ইতোমধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, চর জাহাজ্জিয়া হস্তান্তরের কাজ চলছে। এর পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ সেনানিবাস নির্মাণের জন্য রামুতে ৬৫৭ দশমিক ১৭ একর এবং রুমাতে ৯৯৭ একর জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'পেশাগত দক্ষতার কারণেই সেনাবাহিনীকে পদ্মা সেতুর নির্মাণ পর্যবেক্ষণ এবং অন্যান্য কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।' তিনি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, 'উন্নয়ন অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ শীঘ্রই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।' প্রধানমন্ত্রী ধর্মের নামে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। দরবারে সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভুঁইয়াও বক্তৃতা করেন।

সর্বশেষ খবর