শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

স্বাভাবিক হয়ে উঠছেন সাংবাদিক নাজনীন

মেয়ে চন্দ্রমুখীর মৃত্যুর খবরে পাঁচ তলা থেকে লাফ দেওয়া সাংবাদিক নাজনীন আখতার ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছেন, তরল-জাতীয় খাবারও খাচ্ছেন। পরিচিত সবাইকে চিনতে পারছেন, পাশাপাশি কথাও বলছেন। শারীরিক সক্ষমতা আরও উন্নত হলে নাজনীনকে আইসিইউ থেকে ক্যাবিনে স্থানান্তর করা হবে। সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব না হলেও শীঘ্রই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন বলে আশা করছেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) ৬ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জনকণ্ঠের সিনিয়র প্রতিবেদক নাজনীন আখতার।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ-প্রধান ডা. আবদুর রহমান বলেন, নাজনীন এখনো পুরোপুরি বিপদমুক্ত নন। তার শরীরে অসংখ্য আঘাত। মেরুদণ্ডের চার জায়গায়, পায়ের ওপরের দিকে, হাতের কবজিতে ফাটল রয়েছে। পাঁচতলা থেকে লাফ দেওয়ায় বাঁ দিকের ফুসফুসে আঘাত লেগেছে। ফুসফুসে একটা টিউব লাগানো হয়েছে। বুধবার থেকে তরল-জাতীয় খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। তিনি পরিচিত সবাইকে চিনতে পারছেন, পাশাপাশি কথাও বলছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, নাজনীন তাদের জানিয়েছেন সারা শরীরে তার অসহ্য ব্যথা, রাতভর চোখে ঘুম আসে না। স্বামী সাংবাদিক রকিবুল ইসলাম মুকুল বলেন, গতকাল সকালে ইকো পরীক্ষা করানো হয়েছে। নাজনীন পরিচিত সবাইকে চিনতে পারছে। তার পাশে সব সময় থাকার চেষ্টা করছি। কিছু বলতে চাইলে তার খুব কাছাকাছি যাচ্ছি। কথাগুলো শুনে তার সঙ্গে শেয়ার করার চেষ্টা করছি। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে নাজনীন সুস্থ হয়ে উঠবে।

গতকাল দুপুরের দিকে নাজনীনের বেডে গিয়ে দেখা গেছে, একজন চিকিৎসক মুকুলের সঙ্গে নাজনীনের সার্বিক বিষয়ে কথা বলছেন। পাশেই একজন সেবিকা চিকিৎসকদের দেওয়া পরামর্শগুলোয় চোখ বুলাচ্ছেন। নাজনীন চোখ মেলে মাথা নাড়াচাড়া করছেন। স্বামী মুকুলকে কী যেন বলতে চাইছেন। তার দুই চোখেই জল ছলছল করছে। চোখের পাশ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। মুকুলও একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে চিকিৎসক ছাড়া কারও সঙ্গে তেমন কথা বলছেন না।

১৬ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক দম্পতি দৈনিক জনকণ্ঠের সিনিয়র প্রতিবেদক নাজনীন আখতার ও গাজী টেলিভিশনের প্রধান প্রতিবেদক রকিবুল ইসলাম মুকুলের একমাত্র মেয়ে চন্দ্রমুখী (৪) লিভার ও কিডনি জটিলতায় মারা যায়। মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ শুনে মিরপুরের কল্যাণপুরের ১১ নম্বর রোডের ২০/১ নম্বর বাড়ির পাঁচ তলার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েন নাজনীন। তার চিকিৎসায় বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল কাজী দীন মোহাম্মদকে প্রধান করে ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে কর্তৃপক্ষ। তারা নাজনীনের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন।

সর্বশেষ খবর