বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৩ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ মানছে না স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশের কোনো তোয়াক্কাই করছে না স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। বিদেশি খাতের এ ব্যাংকটি আমানতকারীদের কাছ থেকে স্বল্প সুদে অর্থ সংগ্রহ করলেও ঋণ বিতরণ করছে উচ্চ সুদে। যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ মূহূর্তে ব্যাংকটির আমানত ও ঋণের সুদ হার পার্থক্য (স্প্রেড) ১০ শতাংশেরও বেশি। অথচ স্প্রেড পাঁচ শতাংশের নিচে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর নির্দেশ আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। খবর বাংলানিউজের। প্রতিবেদনে বলা হয়, বারবার নির্দেশ দেওয়ার পরও বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনেক নির্দেশই মানছে না। তাই ব্যাংকটির বিরুদ্ধে আইনগত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। নির্দেশনা না মানায় ব্যাংকটিকে আর্থিক জরিমানা করা যেতে পারে। প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট দেশে কার্যকর সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে ব্যাংকার্স বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। সভায় চারজন ডেপুটি গভর্নর ছাড়াও দেশি-বিদেশি মালিকানার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী উপস্থিত ছিলেন। এখানে ব্যাংকগুলোকে স্প্রেড এক অঙ্কে (৫ শতাংশের নিচে) নামিয়ে আনতে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়। বিশেষ করে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডসহ বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করে দেওয়া হয় ব্যাংকার্স বৈঠকে। এ সভার পুরো একটি মাস পেরিয়ে গেছে। কিন্তু নির্দেশনা আমলে নেয়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। গত সেপ্টেম্বরের হিসাবে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের স্প্রেড ১০ দশমিক ১২ শতাংশ। এটি বেঁধে দেওয়া স্প্রেডের দ্বিগুণ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ব্যাংকটি সাড়ে চার শতাংশের কাছাকাছি হার সুদে সাধারণ আমানতকারীর কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। কিন্তু তা ঋণ হিসেবে বিতরণে সুদ নিচ্ছে ১৫ দশমিক তিন শতাংশ করে। এ মুহূর্তে দেশে ৫৩টি ব্যাংক বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এত বেশি স্প্রেড আর কোনো ব্যাংকের নেই। এ হার ব্যাংক খাতের গড় স্প্রেডের থেকেও দ্বিগুণ। আর বিদেশি নয়টি ব্যাংকের গড় স্প্রেডের থেকে প্রায় তিন শতাংশ বেশি। ব্যাংক খাতে গড় স্প্রেড পাঁচ দশমিক শূন্য এক শতাংশ। আর নয়টি বিদেশি ব্যাংকের গড় স্প্রেড সেপ্টেম্বরে দাঁড়িয়েছে সাত শতাংশের কাছাকাছি।

সূত্রমতে, স্ট্যার্ন্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের পর বিদেশি খাতের ওরি ব্যাংকের স্প্রেড নয় দশমিক ৬৪ শতাংশ, সিটি ব্যাংক এনএ'র নয় দশমিক ৫৮ শতাংশ, এইচএসবিসির আট দশমিক শূন্য চার শতাংশ। এরপর পাঁচ শতাংশের বেশি স্প্রেড করছে কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, সাত দশমিক ২১ শতাংশ ও হাবীব ব্যাংক পাঁচ দশমিক চার শতাংশ। এরপর সবগুলোর স্প্রেড পাঁচ শতাংশের নিচে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবার আরও একটি চিঠি দিয়ে সতর্ক করতে যাচ্ছে স্ট্যার্ন্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে। সন্তোষজনক জবাব না পেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ব্যাংকটিকে জরিমানা করা হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের একজন ঊধর্্বতন কর্মকর্তা বলেন, 'আমাদের স্প্রেডের হার বেশি, এটা সত্য। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক যে নির্দেশনা দিয়েছে সেটি মেনে এক অঙ্কে স্প্রেড নামিয়ে আনা সম্ভব হবে না।'

সর্বশেষ খবর