রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৪ ০০:০০ টা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

অতিথি পাখির কলকাকলি

অতিথি পাখির কলকাকলি

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস এখন অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর। ক্যাম্পাসের লেকগুলো লাল শাপলায় ভরে উঠেছে। শীতের শুরুতেই প্রতি বছরের মতো এবারও শীতের অতিথি পাখিরা রক্তকমল শোভিত এই লেকগুলোতে মেলা বসিয়েছে। ক্যাম্পাসের লেকগুলোতে অতিথি পাখির জলকেলী সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। উপযুক্ত পরিবেশ আর নিরাপদ আশ্রয়ে এসব পাখি নির্ভাবনায় মেতে উঠেছে খুনসুটি আর জলকেলীতে। কেউবা ডুব সাঁতারে ব্যস্ত। লেকের কোথাও তারা জুটিবদ্ধভাবে নিজেদের সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। আবার কখনো চক্রাকারে উড়ে বেড়াচ্ছে মুক্ত আকাশ জুড়ে। এসব পাখির কলকাকলি আর কিচিরমিচির শব্দে ক্যাম্পাসে মধুময় সুরের আবহ বিরাজ করছে। এখন ক্যাম্পাসবাসীর ঘুম ভাঙ্গে অতিথি পাখির কলকাকলিতে। আবার সারা দিন কর্মব্যস্ততা শেষে অতিথি পাখির মধুময় সুরে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছোট বড় ১৬/১৭টি লেক থাকলেও মাত্র ৩টি লেক অর্থাৎ প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক, জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হল সংলগ্ন লেক এবং মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন লেকগুলোতে অতিথি পাখির পদচারণা বেশি থাকে। এ লেকগুলোকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রতিবছর উত্তরের শীতপ্রধান সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, জিনজিয়াং ও ভারত থেকে হাজার হাজার অতিথি পাখি বাংলাদেশে আসে। মূলত অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকেই এরা এদেশে আসে। আবার মার্চের শেষ দিকে তারা তাদের আপন ঠিকানায় ফিরে যায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক পর্যাবেক্ষণ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি বছর ২৪৪ প্রজাতির অতিথি পাখির মধ্যে ক্যাম্পাসে সাধারণত ১২/১৩ প্রজাতির অতিথি পাখি আসে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব পাখি আসে তার মধ্যে বেশির ভাগই হাঁস জাতীয়, যারা পানিতে বসবাস করে। এর মধ্যে সরালি, খঞ্জনা, পাতারিহাঁস, পাতিতারা, নোনাজোৎসা, গয়ার, ধুপানি, লালমুড়ি, বামুনিয়া হাঁস, সিন্ধু ঈগল, বাড়িঘোরা, হুড হুড ইত্যাদি প্রধান।

এদিকে প্রতিবছরই এসব অতিথি পাখির নিরাপত্তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়। লেকগুলো পরিষ্কার করা হয়। এ বছরেও পাখিদের নিরাপত্তার জন্য লেকগুলোতে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা এবং নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রয়েছে নিরাপত্তা কর্মীদের সতর্ক অবস্থান। পাখিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন জায়গায় লাগানো রয়েছে ব্যানার ও ফেস্টুন। সেখানেও আছে বিভিন্ন নির্দেশনা।

এ ছাড়া অতিথি পাখিদের আগমন উপলক্ষে প্রতিবছর এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয় ঐতিহ্যবাহী 'পাখি মেলা'।

নানা বয়সের অসংখ্য মানুষ এসে অতিথি পাখিদের দেখে অনাবিল আনন্দ উপভোগ করেন।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর