রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৪ ০০:০০ টা

গণজাগরণ মঞ্চের রোডমার্চে ফের বোমা হামলা

সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস রুখতে ঠাকুরগাঁও অভিমুখী রোডমার্চের পথে গণজাগরণ মঞ্চের নেতারা বিভিন্ন স্থানে পথসভায় বক্তৃতা করেছেন এবং এর বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে গণজাগরণ মঞ্চের রোডমার্চের গাড়ি বহরে দিনাজপুরেও ককটেল হামলা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

রংপুর : সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, জামায়াত-শিবির পরিবারে ছেলে-মেয়ে বিয়ে দেবেন না। শিবিরকে মেস ও বাসা ভাড়া দেবেন না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিশ্বাস করে না বলেই পাকিস্তানের প্রেতাত্দা জামায়াত-শিবির সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করছে।

সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস রুখতে ঠাকুরগাঁও অভিমুখী রোডমার্চের পথে গতকাল রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের প্রতিবাদে গণজাগরণ মঞ্চ রংপুর এ গণসমাবেশের আয়োজন করে।

দিনাজপুর : বগুড়া থেকে গতকাল সকালে রওনা হয়ে গাইবান্ধা, রংপুর হয়ে সন্ধ্যায় রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের রানীবন্দর পার হওয়ার পরে পরে গণজাগরণ মঞ্চের রোডমার্চের গাড়ীবহরকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। তবে কেউ আহত কিংবা গাড়ী বহরের কোন ক্ষতি হয়নি বলে জানা যায়।

সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ওই মহাসড়কের চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর থেকে ১০ মাইল বাজারের কাছে পেঁৗছার সময় ককটেল ও ঢিল ছোড়া হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।

তিনি বলেন, দেশে ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস শুরু করেছে জামায়াত-শিবির। এদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে তরুণ সমাজসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী মানুষ। সাম্প্রদায়িক শক্তি চিরতরে নির্মূল করার জন্য মাঠে নেমেছে গণজাগরণ মঞ্চ। তাই সরকারকে বলতে চাই- আর কালক্ষেপণ না করে অবিলম্বে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করুন।

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গ ত্যাগ করার জন্য সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইমরান এইচ সরকার বলেন, বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছাড়া রাজনীতি করা যাবে না। জামায়াতকে বাঁচাতে গিয়ে একটি রাজনৈতিক দল এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। অন্য রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে আহ্বান জানাব। অন্যথ্যায় তাদেরও একই পরিণতি বরণ করতে হবে।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রংপুর জেলা কমান্ডার মোসাদ্দেক হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের জেলা সভাপতি সাখাওয়াত রাঙা, একাত্তরের ঘাতক দালাল নিমর্ূল কমিটির জেলা সম্পাদক ডা. মফিজুল ইসলাম মান্টু, রংপুর গণজাগরণ মঞ্চের সমন্বয়কারী রকিবুল হাসান রকেট প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সৈয়দপুরে (নীলফামারী) পথসভায় নেতারা বলেছেন, জামায়াত-শিবির মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করতে ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করছে। একাত্তরের পরাজিত শক্তি দেশজুড়ে সংখ্যালঘু মানুষের ওপর হানাদার বাহিনীর মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তাদের প্রতিহত করতে হবে।

সৈয়দপুর গণজাগরণ মঞ্চের স্থানীয় নেতা কুতুব উদ্দিন আলোর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন গণজাগরণ মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেত্রী লাকী আক্তার, স্থানীয় নেতা হিল্লোল রায় প্রমুখ। সমাবেশ শেষে সন্ধ্যায় নেতারা দিনাজপুরের উদ্দেশে সৈয়দপুর ত্যাগ করেন। এ সময় গণজাগরণ মঞ্চের স্থানীয় নেতা ও সমর্থকরা গণজাগরণ মঞ্চের রোডমার্চের গাড়িবহরকে সৈয়দপুর শহরের শেষ সীমানা পর্যন্ত এগিয়ে দেন।

গাইবান্ধা : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ীতে গতকাল পথসভায় গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস বন্ধে আইন প্রণয়ন করতে হবে। বিশেষ ট্রাইবুন্যাল গঠন করে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের সঙ্গে যেসব ব্যক্তি, গোষ্ঠী জড়িত তাদের বিচার করতে হবে।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা গেটের সামনে অনুষ্ঠিত পথসভায় গণজাগরণ মঞ্চ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সমন্বয়ক শাকিল আকন্দ বুলবুলের পরিচালনায় পথসভায় আরও বক্তব্য দেন গাইবান্ধা-৪ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, লাকী আকতার প্রমুখ।

এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে প্রায় ৩০০ জনের দলটি বগুড়া ত্যাগ করে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় বগুড়ায় পেঁৗছে শহরের সাতমাথায় গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশে বক্তব্য দেন নেতারা। সমাবেশ শেষে রাত সাড়ে ৯টায় ব্যাপক নিরাপত্তাবলয়ের মধ্য দিয়ে শহরের দত্তবাড়ীর টিপটপ কমিউনিটি সেন্টার ও তন্ময় কমিউনিটি সেন্টারে রোডমার্চের কর্মীরা রাতযাপন করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর