রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ০০:০০ টা
বাস্তবে মানছে না কেউই

যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জিরো টলারেন্স

ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কেউ বিতর্কে জড়ালে ছাড় দেবে না সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে যুবলীগ, ছাত্রলীগের কেউ টেন্ডারবাজি কিংবা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়ালে তাৎক্ষণিক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সংশ্লিষ্ট সংগঠন। যে কোনো ধরনের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানো হবে। তবে বাস্তবে মানছে না কেউ।

সূত্রমতে, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা এ ব্যাপারে সংগঠনের দলীয় নেতা-কর্মীদের সতর্কও করেছেন। যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের নেতাদেরও সতর্ক বার্তা জানানো হয়েছে। নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রমতে, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে শুরু থেকেই কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষিত হলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদেরও প্রয়োজনে জবাবদিহি করতে হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণে এবার কেন্দ্রের শীর্ষ নেতারা সতর্ক অবস্থানে। যদিও ইতোমধ্যে ছাত্রলীগ আবার স্বরূপে ফিরে আসছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে হল বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। তবে সংগঠনের এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এখনই লাগাম টেনে ধরতে চান শীর্ষ নেতারা।

এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলের নেতা-কর্মীদের সংগঠনের সব শৃঙ্খলা মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন শাখার সংগঠনগুলোও একই নিয়মেই চলছে। এতে উদ্বেগের কিছুই নেই। সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সংগঠনের নেতা বা কর্মীর কোনো ধরনের সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানো হবে। ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, সংগঠনকে জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়- এমন কর্মকাণ্ড করলেই সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা। আইনবিরোধী কোনো কাজে জড়িত হলে তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতেও জেলা, থানা, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিদ্দিকী নাজমুল আলম আরও বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কাজ করেন এবং তার ভিশন ও মিশন মেনেই আমরা কাজ করছি। আমাদের অবস্থানে থেকে সরকারের সাফল্য তুলে ধরতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দলীয় সূত্রমতে, বিগত মহাজোট সরকার ব্যাপক উন্নয়ন করলেও যুবলীগ, ছাত্রলীগের টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজির কারণে তা ঢাকা পড়ে যায়। যে কারণে এখন থেকেই এসব সংগঠনের নেতাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় দলের হাইকমান্ড। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকারের শুরুতে ছাত্রলীগ বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলেও এখন পর্যন্ত সেই সহযোগী সংগঠন যুবলীগ কোনো নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়ায়নি। সংগঠনের কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সব শাখায় চরম হুঁশিয়ারি দেওয়া আছে। যে কোনো ধরনের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়ালেই সাংগঠনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি আইনের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দল ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হলে ছাড় দেওয়া হবে না। সে যত বড় মাপেরই নেতা হোক না কেন। সংগঠনের নেতা-কর্মীদের অপকর্মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানো হবে। হারুন অর রশিদ বলেন, যা কিছু হয় ন্যায়নীতির ভেতর দিয়েই করতে হবে। সাংগঠনিক কার্যক্রম ঢেলে সাজাতে কিছু দিনের মধ্যেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। এদিকে আগামী এপ্রিল মাস থেকে সারা দেশে সাংগঠনিক সফর করার পাশাপাশি তৃণমূলে সংগঠনকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক শেখ রাসেল বলেন, বিভিন্ন উপজেলায় আমাদের সংগঠনের কমিটির মেয়াদ ১২-১৪ বছর পার হয়ে গেছে। এসব কমিটি ভেঙে দিয়ে এপ্রিল মাস থেকে সম্মেলন করে সংগঠনে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনা হবে।

সর্বশেষ খবর