কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেছেন, আসছে জুনের পর পাল্টে যাবে কুমিল্লা সিটির চেহারা। জুনে জাপানভিত্তিক দাতা সংস্থা জাইকা থেকে ৮৬ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র ও বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু গতকাল এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন।
সাক্কু বলেন, 'দায়িত্ব নিয়েছি আজ দুই বছর তিন মাস হতে চলল। এ সময়ে আর্থিক সংকটের কারণে মনমতো কাজ করা যায়নি। কুমিল্লা নতুন সিটি করপোরেশন। সিটি করপোরেশন এলাকায় শিল্প কারখানা বেশি নেই। তাই আয়ও কম। স্বল্প আয় দিয়েই মাসে ৮২ লাখ টাকার বেতন দিতে হয়। গত দুই বছরে মাত্র ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। জুনে ৮৬ কোটি টাকা দিয়ে পুরনো ১৮টি ওয়ার্ডে উন্নয়ন কাজ করা হবে। পরে ২০১৫ সালে জাইকা থেকে আরও ২০০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। তা দিয়ে পুরনো ১৮টি এবং নতুন নয়টি ওয়ার্ডে কাজ করা হবে। এতে রাস্তা, ড্রেন ও সড়কবাতি সমস্যার সমাধান হবে। সীমিত অর্থ দিয়ে মধ্যরাতে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কাজের তদারক করছি। দিনের ১৬টি ঘণ্টা কাটছে ড্রেন ও ডাস্টবিনের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ তদারক করে।' তিনি বলেন, 'নিজের ফান্ড থেকে টাকা দিয়ে পানির ফোয়ারা আর ফুলের বাগান করে কুমিল্লা নগরীর সৌন্দর্য বর্ধন করেছি।' মনিরুল হক সাক্কু বলেন, 'আমি তৃণমূলের মানুষদের সঙ্গে সব সময় মেশার চেষ্টা করেছি। তাদের চাহিদাও আমি বুঝতে পারি। তারা বেশি কিছু চান না। সমস্যা সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি তাদের কথা মন দিয়ে শুনলে এবং হাসিমুখে কথা বললে তারা খুশি হন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠান চালাতে অনেক সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হতে হয়। এ জন্য সরাসরি তদারক করলে কাজের গতি বেড়ে যায়।' তিনি বলেন, 'আমি ব্যক্তিগতভাবে ৩৪ বছর ধরে বিএনপি করছি। তবে সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে আমার কাছে দল, ধর্ম বিবেচনার বিষয় নয়। আমার দরজা সব সময় সব মানুষের জন্য খোলা। আমি সব সময় কুমিল্লার মানুষের পাশে থাকতে চাই। মানুষের ভালোবাসাই আমার একমাত্র পুঁজি।'
প্রসঙ্গত, মনিরুল হক সাক্কু প্রয়াত মন্ত্রী আকবর হোসেনের মামাতো ভাই। তার হাতেই সাক্কুর রাজনীতির হাতেখড়ি। অবশ্য সাক্কু নিজেও রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। তার বাবা আলহাজ সাজেদুল হক ছিলেন দুবার নির্বাচিত এমএনএ। ২০০৫ সালের উপনির্বাচনে মনিরুল হক সাক্কু পৌর মেয়র নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি ওই দায়িত্ব পালন করেন। মামলা ও আইনি জটিলতা শেষ করে ২০০৯ সালের ১৬ নভেম্বর তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে আবার পৌর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান। মনিরুল হক সাক্কু ১৯৯৩ সালে জেলা যুবদলের সভাপতি হন। ওই পদে ২০১০ পর্যন্ত ছিলেন। ২০০৩ সালে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হন তিনি। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা জেলা যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য। ব্যক্তিজীবনে মনিরুল হক সাক্কু এক কন্যসন্তানের জনক।