রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০০ টা
অন-অ্যারাইভাল ভিসায় কড়াকড়ি

নজরদারি বিদেশি নাগরিকদের ওপর

বিদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশে অবস্থানকালে তাদের ওপর মনিটরিং করতে নতুন অ্যাকশন প্ল্যান করতে যাচ্ছে সরকার। বিদেশিরা যাতে দেশের অভ্যন্তরে ঢুকে অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে সে জন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা। তবে এখনই অন-অ্যারাইভাল ভিসার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র সচিব সি কিউ কে মুসতাক আহমদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ইতোমধ্যে আমরা অন-অ্যারাইভাল ভিসার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করেছি। অনেক দেশের সঙ্গেই আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য আছে। এ কারণে আমরা বলেছি যারা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় আসবেন তাদের কাগজপত্র ভালো করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে, কী কাজে আসছেন তা যাচাই-বাছাই করে ভিসা দিতে। যদি ভিসা কর্মকর্তা সন্তুষ্ট না হন তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে এখনো ডাটাবেজ পুরোপুরি অনলাইন পদ্ধতিতে চালু হয়নি। তবে সম্পূর্ণ অনলাইন পদ্ধতি চালু করার কাজ প্রক্রিয়াধীন। তিনি বলেন, অনলাইন পদ্ধতি চালু হলে তখন কে কবে আসছেন, যথাসময়ে গেছেন কি না- সব তথ্যই জানা যাবে।

সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিকদের আসার সংখ্যা অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে। মূলত ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটায় বিদেশিদের আগমন ঘটছে। এ সুযোগে বিভিন্ন দেশের লোকজন অন-অ্যারাইভাল ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছেন। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে আসা বিদেশি নাগরিক বিশেষ করে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ, চীন ও তাইওয়ানের নাগরিকদের বাংলাদেশে অবস্থান করে ভিওআইপিসহ মাদক ব্যবসা এবং বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে। কিন্তু ইমিগ্রেশনে থাকা পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) জনবল সংকটের কারণে বিদেশি নাগরিকদের ওপর সঠিকভাবে নজর দেওয়া কিংবা মনিটরিং করা যাচ্ছে না। এর ফলে সহজেই অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকরা। ইতোমধ্যে চীন, তাইওয়ান ও আফ্রিকার একাধিক দেশের নাগরিকরা ভিওআইপি ব্যবসা করতে গিয়ে র্যাব-পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। তখন দেখা গেছে এদের বেশির ভাগেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু তারা সিল-স্বাক্ষর জাল করে ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন।

কতসংখ্যক বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন তারও সঠিক তথ্য নেই সরকারের নিরাপত্তাসংশ্লিষ্টদের কাছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিদেশিদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য সংগ্রহে রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এসবি ও ইমিগ্রেশনের মধ্যে একটা সমন্বয় করার প্রক্রিয়া চলছে। এ কাজ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশিদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য থাকবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিদেশিরা বিশেষ করে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ, চীন ও তাইওয়ান থেকে আসা লোকজন ঠিকানা বদল করে অপরাধে জড়াচ্ছেন। এটা বেশ উদ্বেগের বিষয়। বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে। এটা রোধ করতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে বিদেশিদের অবাধ আগমন যেমন ঠেকানো যাবে তেমনি বিদেশিদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধপ্রবণতা কমবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বহির্গমন ও নিরাপত্তা) সফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা একটা অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করছি। তবে এটা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

সর্বশেষ খবর