রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০০ টা

প্রেম করে যুবকদের ফ্ল্যাটে আনাই ছিল দোলার কাজ

প্রেম করে যুবকদের ফ্ল্যাটে আনাই ছিল দোলার কাজ

প্রেম প্রতারণার অভিযোগে দোলা আক্তার গ্রেফতার হওয়ার পর গোয়েন্দা দফতরে তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। প্রতারণার শিকার হয়ে যারা মান-সম্মানের কারণে বিষয়টি চেপে গিয়েছিলেন, তারাও বিভিন্ন ভাবে তথ্য গোয়েন্দা পুলিশের কাছে। গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র এ তথ্য দিয়ে বলেছে, নিত্যনতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে দোলা এবং প্রতারিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে।

সূত্র জানায়, আট দিনের রিমান্ডে থাকা দোলা পুলিশি জেরার মুখে বলেছে, সমাজের বিভিন্ন বিত্তশালী বা ধনী ব্যক্তিদের ফোন নম্বর এনে দিতেন ডিবির এসি পরিচয়দানকারী চাচা আবু তালেব ও ভুয়া ডিবির পরিদর্শক আজাহার উদ্দিন খান। তার কাজ ছিল শুধু ওইসব ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করা। প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে তাদের নিজের ফ্ল্যাটে এনে দিলেই তার কাজ শেষ। এরপর ব্লাকমেইল করে অর্থ হাতানোর কাজটা করত দলের অন্য সদস্যরা।

রাজধানীর মধ্য পাইকপাড়া থেকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয় 'প্রেম প্রতারক' চক্রের সদস্য দোলা আক্তারকে। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

তাদের মধ্যে দোলার আপন খালা প্রতারক প্রেমিকা সালমা বেগম, ভুয়া ডিবির এসআই মোস্তফা ও ভুয়া সাংবাদিক শামীম শিকদার রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা প্রেম-প্রতারণার ফাঁদ পেতে পকেট কেটেছে অসংখ্য পুরুষের। বছরখানেক আগে দোলাকে এ দলে ভেড়ায় তারা। গোয়েন্দা পুলিশ তাদের আট দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

দোলা পুলিশের কাছে বলেছে, চাচার দেওয়া নম্বরে প্রথমে মিস কল দিতাম। একবার নয়, একাধিকবার। কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই নম্বর থেকে কল ব্যাক করত। আমি একটু কথা বলে বলতাম 'রং নাম্বার'। লাইন কেটে দিতাম। ঘণ্টাখানেক পর আবারও মিস কল দিতাম। আবার কল ব্যাক করলে কথা বলতাম। মেয়ের গলা পেয়ে অপর প্রান্তের লোক এমনিতেই কথা বলত। একপর্যায়ে সম্পর্ক গাঢ় হতো। তারপর অপর প্রান্তের ব্যক্তিই আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইতেন। প্রথমে রাজি হতাম না। পরে রাজি হয়ে যেতাম। এরপর কোনো রেস্টুরেন্টে দেখা, নানা বিষয়ে কথোপকথন এডাল্ট বিষয়ে নিয়ে যেতাম আমি নিজেই। এরপর তিনিই আমাকে কোনো ফ্ল্যাটে নিয়ে যেতে চাইতেন। কখনো কক্সবাজার বা অন্য কোথাও বেড়াতে নিয়ে যেতে চাইতেন। আমি বলতাম, আমার খালার বাসা ফাঁকা। এখানে আসেন। বাসা ফাঁকা শুনে তিনি সহজেই রাজি হয়ে যেতেন। এভাবেই আমার কাজ ছিল ফ্ল্যাট পর্যন্ত এনে দেওয়া। বাকি কাজ অন্যরা করত। সূত্র জানায়, গত বছর মিরপুরের একটি স্কুল থেকে তিনি এসএসসি পাস করেছেন। পরিবারের দুঃখ-কষ্ট ঘোচাতে বছরখানেক আগে তিনি চাচা ও খালার 'প্রেম প্রতারণা' চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।

গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, চক্রটি এ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সর্বশেষ রংপুরের এক রাজনীতিক এই চক্রের ফাঁদে পড়েন। তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হলে তিনি বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ চক্রটি শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করে।

 

সর্বশেষ খবর