রবিবার, ২২ জুন, ২০১৪ ০০:০০ টা

ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় জামায়াত

ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় জামায়াত

বর্তমান সরকারের আমলে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় জামায়াতে ইসলামী। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগ থাকা নেতাদের ফাঁসির রায় এবং সাজা কার্যকর হওয়ার আশঙ্কা করছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৯ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দলটি। বছরের পর বছর ধরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় দলীয় কার্যালয় বন্ধ। দলীয় প্রধান থেকে শুরু করে তৃণমূলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী মামলার জালে আটকা। দলের নিবন্ধন বাতিলের পথে। প্রশাসনের কঠোরতায় রাজপথে কোনো কর্মসূচিও বাস্তবায়ন করতে পারছে না দলটি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সহিংস আন্দোলনের কারণে প্রশাসনের রোষানলের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও সমর্থন হারিয়েছে জামায়াত-শিবির। গ্রেফতার-নির্যাতনে অনেক কর্মী-সমর্থক নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে।

এ অবস্থায় দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা আর শঙ্কায় আচ্ছন্ন জামায়াতের নীতি নির্ধারকরা। এ প্রভাব পড়েছে দলের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওপরও। সেখানেও হতাশা বিরাজ করছে। শিবির কর্মীরা এখন আর আগের মতো রাজপথে নামছে না। অধিকাংশ নেতা-কর্মী আত্দগোপনে রয়েছেন। বিগত উপজেলা নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থীদের নিয়ে সক্রিয় থাকলেও এখন জামায়াত কর্মীরা একেবারে নিশ্চুপ। এ অবস্থায় জামায়াতের অনেক নেতা-কর্মী ব্যবসা-বাণিজ্য আর ছাত্রশিবিরের বড় একটি অংশ ক্যারিয়ার গঠনে মনোযোগী হয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রকাশ্য সাংগঠনিক তৎপরতার পরিবর্তে আপাতত শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাংবাদিকতা, গবেষণা, সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে মনোনিবেশ করেছেন তারা। উদ্দেশ্য নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ অক্ষুণ্ন রেখে দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা। তবে জামায়াতের উগ্রপন্থি নেতা-কর্মীরা বলছেন, জামায়াতে ইসলামী একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। সরকার যদি নিয়মতান্ত্রিকভাবে সভা-সমাবেশ ও কর্মসূচি পালন করতে না দেয়, তাহলে সরকারের সুমতির জন্য চিরকাল অপেক্ষা করবে না জামায়াত। জামায়াত নেতাদের অভিযোগ, গত চার বছর ধরে মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় আর পল্টনে দলটির ঢাকা মহানগরী ও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয় বন্ধ করে পাহারা দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কার্যালয়ের আশপাশে গেলেই নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তারা প্রকাশ্যে কোথাও জড়ো হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। তাদের দাবি, গত ৫ বছরে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এক লক্ষাধিক। আসামি করা হয়েছে তাদের ৮ লক্ষাধিক নেতা-কর্মীকে। আটক হয়েছে এক লাখের বেশি। তবে নিয়মিত মুক্তি পাওয়ায় বর্তমানে আটকের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। এ ছাড়া গুম ও অপহরণ হয়েছেন সহস্রাধিক নেতা-কর্মী। জানা গেছে, সম্প্রতি কেন্দ্র থেকে জামায়াত-শিবির কর্মীদের বিনা উসকানিতে গাড়ি ভাঙচুর, ককটেলবাজিসহ, নাশকতামূলক সব কর্মকাণ্ডে জড়িত না হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সংগঠনের কেউ যেন সন্ত্রাসী কোনো কাজে জড়িত না হয় সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে সাংগঠনিক কাজের পাশাপাশি শিবির নেতা-কর্মীদের মেধা অনুযায়ী ভবিষ্যতে শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য সাংগঠনিক পরিচয়ের বাইরে ভিন্ন নামে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে প্রশিক্ষণমূলক ও লাভজনক বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর