রবিবার, ২২ জুন, ২০১৪ ০০:০০ টা
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর

মানব পাচার নির্মূলের সর্বনিম্ন মানদণ্ড মানছে না বাংলাদেশ

বাংলাদেশ মানব পাচার নির্মূল করার জন্য সর্বনিম্ন মানদণ্ড পুরোপুরি মেনে চলে না বলে অভিযোগ করা হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মানব পাচার বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে। মানদণ্ড অর্জনে উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টার কথা প্রতিবেদনে বলা হলেও বেশ কিছু অসঙ্গতিকে তুলে ধরেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন থেকে শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২-এর (পিএসএইচটিএ) অধীনে অধিকতর মামলার তদন্ত ও বিচারকাজ পরিচালনা করেছে, কিন্তু আগের বছরগুলোর মতোই অত্যন্ত স্বল্পসংখ্যক পাচারকারীকেই অভিযুক্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে বাংলাদেশের অবস্থান আগের মতোই রয়ে গেছে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের কোনো আনুষ্ঠানিক রেফারেল প্রক্রিয়া নেই এবং পাচারে যারা শিকার হয়েছেন তাদেরকে শনাক্ত ও সহায়তা দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট পরিমাণ পুলিশ এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়নি। সরকার এক দিকে যেমন নিয়োগকারী এজেন্টদের লাইসেন্স দিতে কঠোরতর মানদণ্ড আরোপ করেছে, অন্য দিকে এসব এজেন্ট অত্যন্ত উচ্চ ও বৈধ নিয়োগ ফি গ্রহণ করা অব্যাহত রেখেছে। বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে বাধ্যতামূলক শ্রম ও দেহব্যবসার জন্য পাচারকৃত নারী, পুরুষ ও শিশুর জন্য বাংলাদেশ একটি উৎস রাষ্ট্র এবং কিছুটা ছোট পরিসরে হলেও একই উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ গন্তব্য রাষ্ট্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিছু বাংলাদেশি নারী ও পুরুষ স্বেচ্ছায় ইরাক, ইরান, লেবানন, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ব্রুনাই, সুদান, মরিশাস, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে কাজ করতে যায়।

তারা এমন কিছু পরিস্থিতির শিকার হয় যা বাধ্যতামূলক শ্রমের নির্দেশক। বিদেশে কাজ করতে যাওয়ার আগে অনেক অভিবাসী শ্রমিকই ঋণ নেয়। কিছু নিয়োগ সংস্থা ও নিয়োগকারী এজেন্ট জালিয়াতিও করে থাকে। বাংলাদেশ থেকে কিছু নারী ও শিশু ভারত ও পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে তারা বাণিজ্যিকভাবে যৌন অপব্যবহার অথবা বাধ্যতামূলক শ্রমের শিকার হয়। বাংলাদেশে বিশেষ করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মানব পাচারের শিকার হয়ে থাকে। এ ছাড়া দেশের মধ্যেও কিছু বাংলাদেশি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক যৌন কাজে ব্যবহারের জন্য পাচারের শিকার হয়। এদের মধ্যে গ্রামীণ এলাকায় প্রধানত শিশু ও প্রাপ্তবয়স্করা গৃহদাসত্ব এবং বাধ্যতামূলক ও দাসশ্রমের শিকার হয়। পথশিশু বা টোকাইদের অপরাধে লিপ্ত হতে বা ভিক্ষাবৃত্তি করতে বাধ্য করা হয়। ভিক্ষাবৃত্তির হোতারা মাঝে মধ্যে শিশুদের বিকলাঙ্গ করে দেয়, যাতে করে তারা ভিক্ষাদাতাদের সহানুভূতি আদায় করতে পারে এবং আরও বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে পিতামাতারা দাসশ্রমের জন্য তাদের সন্তানদের বিক্রি করে দেয় আবার অন্যান্য ক্ষেত্রে দেখা যায় শিশুরা জালিয়াতি ও শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে বাণিজ্যিক শ্রম বা যৌন অপব্যবহারের শিকার হয়। এসব স্থানের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, অথবা প্রতারণার মাধ্যমে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা।

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর