রবিবার, ২২ জুন, ২০১৪ ০০:০০ টা

প্রতিটি গ্রামে সাইবার ক্যাফে করাই আমার স্বপ্ন : জয়

প্রতিটি গ্রামে সাইবার ক্যাফে করাই আমার স্বপ্ন : জয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, দেশের প্রতিটি গ্রামের মানুষ যাতে ইন্টারনেট সুবিধা পায় সেটিই আমার স্বপ্ন। প্রতিটি গ্রামে একদিন সাইবার ক্যাফে হবে বলেও আমি স্বপ্ন দেখি। বিশ্বের অন্যান্য দেশ যদি পারে তাহলে বাংলাদেশ কেন পিছিয়ে থাকবে? গতকাল সকালে রাজধানীর কম্পিউটার কাউন্সিল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় জয় আরও বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জয়। তিনি দর্শক গ্যালারিতে উপস্থিত ফ্রিল্যান্সার, তথ্য সেবাকেন্দ্রের সেবকসহ প্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের প্রশ্নের জবাব দেন। সভায় উপস্থাপক ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে মতবিনিময় সভায় জয়ের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে মুগ্ধ ছিল পুরো দর্শক গ্যালারি। ৬৪টি জেলা থেকে পুরস্কারপ্রাপ্ত ফ্রিল্যান্সারসহ প্রযুক্তি খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন প্রকল্পের পরিচালক কবির বিন আনোয়ারও বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক তার সূচনা বক্তব্য শেষে জয়ের হাতে মাইক্রোফোন তুলে দিয়ে তথ্য প্রযুক্তি খাতে তার পরিকল্পনা ও গত সাড়ে ৫ বছরের সাফল্য সম্পর্কে অনুভূতি জানতে চাইলে জয় বলেন, আগামীতে তথ্য প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশে রপ্তানি আয় বাড়ানো আমার লক্ষ্য। সত্যি কথা বলতে কী সাড়ে ৫ বছর আগে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডিজিটাল বলে কিছু ছিল না। ডিজিটাল বলতে বড় জোড় একটি কম্পিউটার ও প্রিন্টার কেনা এবং একটি ই-মেইল করা। যা হওয়ার তা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত সাড়ে ৫ বছরে হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে সরকার ইচ্ছে করলেই পারে, ইচ্ছেটাই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের কাছে আমরা তথ্য ও প্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দিতে পেরেছি বলেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পুরস্কার পাচ্ছি। সরকারের প্রতিটি টার্মেই এ পুরস্কারের ধারা অব্যাহত থাকায় আমরা গর্বিত। ইতিমধ্যে ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্র থেকে ৭০ ধরনের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ভবিষ্যতের পরিকল্পনা তুলে ধরে জয় বলেন, যেসব ইউনিয়ন তুলনামূলক বড় সেখানে একাধিক তথ্য সেবা কেন্দ্র করা হবে। জয় বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের কানেকটিভিটি বাড়াতে আমরা গত টার্মে থ্রিজি বাস্তবায়ন করেছি এই টার্মে ফোরজি বাস্তবায়ন করা হবে। মোবাইল অপারেটররা ইচ্ছে করলে এখনই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফোরজি চালুরও অনুমতি পেতে পারে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, দেখুন আইটি খাত কিন্তু গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি নয়। এই খাতে আইডিয়া ছাড়া কিছু করা সম্ভব নয়। আমরা চাই প্রশিক্ষণ বাড়াতে, ফ্রিল্যান্সারদের কাজের পরিধি বাড়াতে, মহিলা উদ্যোক্তাদের কাজে লাগাতে। সরকারি সহায়তা প্রসঙ্গের অবতারণা করে জয় বলেন, দেখুন যুক্তরাষ্ট্রেও কিন্তু সফটওয়্যার কিংবা কোনো উদ্ভাবনের জন্য সরকারি সহায়তা দেওয়া হয় না। সেখানে ব্যক্তিগত খাত থেকে তাদের সহায়তা দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের দেশে তথ্য ও প্রযুক্তির জন্য ব্যক্তিগত খাত থেকে বিনিয়োগ গড়ে ওঠেনি। ব্যবসায়ীদের উচিত ভালো একটি ওয়েবসাইট কেউ করলে সেখানে বিনিয়োগ করা। ফ্রিল্যান্সাররা উদ্যোক্তা হলে তাদের জন্য কোনো আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে কিনা একজন ফ্রিল্যান্সার এর এমন প্রশ্নের জবাবে জয় বলেন, বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে কথা বলব। এ বিষয়টা সমাধান করা যাবে। এ সময়ে বেসিসের সভাপতি শামীম আহসানও জয়ের বক্তব্যে সুর মিলিয়ে বলেন, বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ফ্রিল্যান্সারদের সেখান থেকে সহায়তা করা হবে। যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিভাগ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন বিভাগ এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। জয় বলেন, ইন্টারনেট হাইস্পিড করার জন্য সাবমেরিন কেবল রয়েছে। এটাতে কোনো সমস্যা হলে ভারতের মাধ্যমে দুটি সাবস্টিটিউট কানেকশন লাইন রয়েছে। তিনি বলেন, আগামীতে ফাইবার অপটিক কেবল ইউনিয়ন পর্যায়েও পৌঁছে দেওয়া হবে।

 

 

 

 

সর্বশেষ খবর