শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা
সফল মানুষ

কলমিশাক চাষে স্বাবলম্বী হেলাল

কলমিশাক চাষে স্বাবলম্বী হেলাল

অনেকটা বিনা পুঁজিতে একটু শ্রম আর পরিচর্যা করেই কলমিশাক চাষে স্বাবলম্বী হয়েছেন বিরল উপজেলার বিজোড়ার মো. রিয়াজুল হকের ছেলে মো. শাহ হেলাল। আর্থিক টানাপড়েনে দশম শ্রেণিতেই পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায় হেলালের। অভাব আর বেকারত্ব সামাজিকভাবে তাকে হীন করে তুলেছিল। ছয় ভাইয়ের মধ্যে সে চতুর্থ। আর সবার থেকে তাকেই যেন বেকারত্ব আর দরিদ্রতা বেশি গ্রাস করে। সামাজিক লাঞ্ছনায় সে ভাবত আমি যদি স্বাবলম্বী হতে পারতাম। মনে হতাশা দখল করতে না পারলেও কখনো যে সুখের দিন আসবে তাও ঠিক বুঝতে পারেনি। কলমিশাক চাষেই পেয়ে যায় সফলতা, আসে আর্থিক সচ্ছলতা। হেলাল জানান, কলমিশাক গাছের আগা কেটে নিয়ে অাঁটি বেঁধে বিক্রি করলেও ওই গাছের চারা আর লাগাতে হয় না। একদিকে কলমিশাক তোলা শেষ হতে না হতেই পেছনের দিকে আবার শাকে ভরপুর হয়ে যায়। এতে মন জুড়িয়ে যায়। এভাবে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার কলমিশাক বিক্রি করে মাসে প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা আয় হয় তার। সফল কলমি চাষি মো. শাহ হেলাল জানান, এবার ১০ কাঠা জমিতে কলমিশাক চাষ করেছেন। এতে প্রথমবার খরচ হয় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টাকা এবং পরে প্রতি মাসে খরচ হয় ১৫০০ টাকা। বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় ১২-১৫ হাজার টাকার কলমিশাক বিক্রি করা যায়। জানা যায়, তার স্ত্রী মাহমুদা খাতুনের অনুপ্রেরণায় ২০০৮ সালে তিনি প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে ৫ কাঠা জমিতে দেশি কলমি জাতের শাক চাষ করেন। এতে আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় পরের বছর বেশি করে চারা সংগ্রহ করেন এবং বেশি পরিমাণ জমিতে এ জাতের কলমিশাক চাষের উদ্যোগ নেন। এখন তার ক্ষেত পরিচর্যার জন্য মাঝে মাঝে ২-৩ জন লোক নিয়ে কাজ করতে হয়। রোগবালাই তেমন না থাকলেও জমিতে ইউরিয়া ও কীটনাশক বিষ প্রায় প্রতি সপ্তাহে দিতে হয়। তিনি জানান, ১৫-১৮টি গাছের অংশ নিয়ে একটি অাঁটি তৈরি করা হয়। প্রথম দিকে প্রতি কুড়ি অাঁটি শাক পাইকারি ২২ থেকে ২৪ টাকা বিক্রি করা যেত। মাঝেমধ্যে এ দাম ওঠানামাও করে। প্রতিদিন শেষ বিকালে কলমিশাক কেটে ছোট ছোট অাঁটি বাঁধা হয় এবং ভোরে বাইসাইকেলে নিয়ে দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজার নিয়ে পাইকারি ক্রেতাদের কাছে এক কুড়ি অাঁটি ২০-২২ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার কলমিশাক বিক্রি করে মাসে প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা আয় হয়। তিনি জানান, স্ত্রী, চার মাসের ছেলে মাহিম ও সাড়ে তিন বছর বয়সের মেয়ে হাবিবাকে নিয়ে তার পরিবার। তিনি তার সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার আশাবাদী।

 

সর্বশেষ খবর