শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

জেহাদি ট্রেনিংয়ে রংপুরে পাঠানো হয় আসামের যুবকদের

তদন্তে ঢাকা আসতে চায় এনআইএ

জেহাদি প্রশিক্ষণ নিতে আসামের যুবকদের পাঠানো হতো বাংলাদেশের রংপুরে! চাঞ্চল্যকর অভিযোগটি করেছে ভারতের একটি সর্বভারতীয় ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম নিউজ এক্স। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো আসামের একটি গোয়েন্দা রিপোর্ট ফাঁস করে মঙ্গলবার ওই গণমাধ্যমটি দাবি করে, জেহাদি প্রশিক্ষণ নিতে আসামের যুবকদের পাঠানো হতো বাংলাদেশের রংপুরে। জমিয়ত উলেমা-হিন্দ ও এআইইউডিএফ-এর তত্ত্বাবধানেই বাছাই করে অসমের মুসলিম যুবকদের সন্ত্রাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ১২ পৃষ্টার গোয়েন্দা রিপোর্টটি তুলে ধরে গণমাধ্যমটিতে বলা হয়েছে, গত জুন-জুলাই মাসে ধুবড়ির সুখচর থেকে মুসলিম যুবকদের একটি দল বাংলাদেশে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়েছিল। প্রায় ১৫-২০ জন যুবক বাংলাদেশের রংপুরে গিয়ে জেহাদের পাঠ নিয়েছে। জমিয়ত উলেমা-হিন্দ ও এআইইউডিএফ একযোগে বাছাই করেছিল সেই যুবকদের। কমবয়সী ১৫-২০ যুবকের সেই দলকে জমিয়ত-উলেমার স্বেচ্ছাসেবক বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। এখানেই শেষ নয়, প্রথম দলটি প্রশিক্ষণ শেষ করার পর পরবর্তীতে দ্বিতীয় আরেকটি দলও বাংলাদেশে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। গোয়েন্দা রিপোর্টে পরিষ্কার বলা হয়েছে, জমিয়ত-উলেমা-হিন্দ ও এআইইউডিএফের তত্ত্বাবধানে মুসলিম যুবকদের বাছাই করা হচ্ছে। যারা বাংলাদেশে গিয়ে সন্ত্রাসের প্রশিক্ষণ নেবে। চলতি অক্টোবর-নভেম্বরে দ্বিতীয় দলটি বাংলাদেশে যাওয়ার কথা রয়েছে। ওই টিভি চ্যানেলে সংবাদটি প্রচারিত হওয়ার পরই অসমসহ ভারতজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। যদিও চ্যানেলটির রিপোর্ট নিয়ে অসম পুলিশের পক্ষ থেকে সত্যতা নিশ্চিত করে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। অতি সম্প্রতি বরপেটা থেকে জামা’আত-উল মুজাহিদীনের ছয় জেহাদিকে গ্রেফতার করেছে অসম পুলিশ।
তদন্তে ঢাকা আসতে চায় এনআইএ : বর্ধমানে বোমা হামলা ঘটনার তদন্তের জন্য এবার বাংলাদেশে যেতে পারে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)-এর প্রতিনিধি দল। খবর ভারতীয় সংবাদসংস্থা পিটিআই-এর। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গত ২ অক্টোবর ওই বিস্ফোরণ কাণ্ডে জামাত সক্রিয়তার হদিস পেয়েছে গোয়েন্দারা। তদন্তে এও জানা যায় বিস্ফোরণ কাণ্ডে মৃত দুই ব্যক্তি সন্দেহভাজন জামা’আতুল মুজাহিদীনের সদস্য। এই বিস্ফোরণ কাণ্ডে ইতিমধ্যেই দুই মহিলাসহ চার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও  ইউসুফ, শেখ কওসরসহ এই কাণ্ডের মূল চক্রীরা এখন পলাতক।
বর্ধমান কাণ্ডে এই পলাতকরা বাংলাদেশে লুকিয়ে আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখতে চায় গোয়েন্দারা।
ধৃতদের জেরা করে গোয়েন্দারা এও জানতে পারে বর্ধমানে তৈরি ১২০টি ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) চোরাইপথে বাংলাদেশে পাচার করা হয়েছিল। মোট চার দফায় এই বিস্ফোরক পাচার করা হয়েছিল বলেও জানা যায়। গোয়েন্দারা জানতে চায় সেসব কোথায় পৌঁছেছে। প্রতিবেশী দেশে পাচার করা এই বিস্ফোরকগুলো সেদেশে নাশকতা তৈরির জন্যই যে পাঠানো হয়েছিল সে ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত গোয়েন্দারা।
ঢাকার সেগুনবাগিচায় সেদেশের পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া দুই জামা’আতুল মুজাহিদীন সদস্য আসিফ আদনান (২৬) এবং ফজলে ইলাহী তানজিল (২৪)-এর তদন্ত রিপোর্টও বাংলাদেশের কাছে চেয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতীয় গোয়েন্দাদের মতে সেই রিপোর্ট হাতে এলেও বর্ধমান বিস্ফোরণের কাণ্ডের উল্লেখযোগ্য মোড় নিতে পারে। সূত্রটি জানাচ্ছে এসব দিক বিবেচনা করেই তদন্তের স্বার্থেই বাংলাদেশে যাওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি বর্ধমান বিস্ফোরণ কাণ্ডে জঙ্গি যোগ, হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনাসহ সব তথ্য সংবলিত একটি পূর্ণাঙ্গ ডশিয়ার খুব শীঘ্রই বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
তাদের বলব, ‘আমার বিরুদ্ধে কোনো তথ্য প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নিতে। আমি যে কোনো ফলাফলের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত’। একই সঙ্গে ওই চ্যানেলটিকেও হুঁশিয়ারি দিয়ে এই সংবাদকে মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়েছেন তিনি। সন্ত্রাসবাদীকে প্রশয় দেন না বলেও জানান এআইইউডিএফ প্রধান।

সর্বশেষ খবর