শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

কড়া নাড়ছে শীত

কড়া নাড়ছে শীত

দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। রাজধানীতে দিনে রোদের তেজ থাকলেও সকাল-সন্ধ্যায় হেমন্তের মিহি কুয়াশা শীতের আগাম বার্তা দিচ্ছে। নগরজীবনে কার্তিকের চিরায়ত রূপের দেখা না মিললেও গ্রামে তা সৌন্দর্যের ডালি মেলে ধরেছে। ফসলের মাঠজুড়ে সোনালি আভায় সকাল-সন্ধ্যা জমছে মিহি কুয়াশা। প্রকৃতির এ পরিবর্তনই বলে দিচ্ছে, দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। আবহাওয়ায় আসছে পরিবর্তন। এ ছাড়া ষড়ঋতুর দেশে নবান্নের সুবার্তা নিয়ে আসা কার্তিক মাসে প্রকৃতির চিরায়ত রূপ এমনই হয়। ফসলের মাঠজুড়ে সোনালি হাসির আভা ছড়িয়ে পড়ে। কার্তিকের মাঝামাঝিতে শহরে শীতের প্রকোপ তেমনটা অনুভূত না হলেও গ্রামাঞ্চলে শীত পড়তে শুরু করেছে। শীতের আগমন বাংলার মানুষের মনে এক অনাবিল আনন্দের জন্ম দেয়। শীত শুরুর আগেই কৃষকের ফসল কাটা প্রায় শেষ হয়ে আসে। আর গোলাভরা ধানের এ আনন্দকে উৎসবে পরিণত করতে আয়োজন করা হয় রস-পিঠার। রস আর পিঠার এ আয়োজন চোখে পড়ে গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে। আর দিনকয়েক পড়েই কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়বে সারা দেশ। কনকনে ঠাণ্ডায় কাঁপতে কাঁপতে দৈনন্দিন কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যেতে হবে সবাইকে। আর সবাইকে প্রস্তুত হতে হচ্ছে শীতকে বরণ করতে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, গত দুই দিন দেশের কয়েক জায়গার হালকা বৃষ্টি শীতের আগমনী বার্তা জানিয়েছে। ডিসেম্বর থেকে শীতের শুরু হলেও তাপমাত্রা এখন থেকে ক্রমেই কমতে থাকবে। এর প্রভাবে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শীতের আমেজ অনুভূত হচ্ছে। আগামী সপ্তাহেই মৌসুমি বায়ুর প্রভাব কমে গিয়ে বাতাস বইতে পারে উত্তর দিক থেকে। এ বাতাসই হিমালয় পাড়ি দিয়ে শীত নিয়ে আসবে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে। এ দেশে শীতের আগের ঋতুটি হেমন্ত। আবহাওয়াবিদরা এ সময়টাকে বলছেন ট্রানজেকশন পিরিয়ড। এ সময় প্রকৃতিতে চলে বর্ষার বিদায় আর শীতের আগমনের প্রস্তুতি। প্রকৃতিতে শীত আসে একটু একটু করে।
আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশে শীত মৌসুমের শুরু হলেও এবারে আগেভাগে শীত অনুভূত হচ্ছে। বর্তমানে দেশের গড় তাপমাত্রা ২০-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাই দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শীত অনুভূত হবে। এ তাপমাত্রা দিন দিন ক্রমেই কমতে থাকবে। এদিকে বর্তমানে মৌসুমি লঘুচাপটি দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে এবং এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। নভেম্বরে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ বৃষ্টিপাতেই পুরোপুরি শীত শুরু হবে। নভেম্বরে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে তিনটি নিুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে। গত কয়েক দিনের আবহাওয়া পর্যালোচনায় দেখা যায়, এক সপ্তাহ আগে সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক ছিল। ওই সময় আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা ছিল। কিন্তু সেই পরিবেশে শীত শীত ভাব চলে এসেছে। কোথাও কোথাও অল্প বৃষ্টিপাতও হয়েছে। ২৬ অক্টোবর ঢাকায় যেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। কয়েক দিনের ব্যবধানে তা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। এমনকি সর্বনিু ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসও রয়েছে তাপমাত্রা। রাজশাহীতে কমেছে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া রংপুরে ৩০ ডিগ্রির স্থলে ২৭ ডিগ্রি, খুলনায় ৩২ ডিগ্রির স্থলে ৩১ ডিগ্রিসহ দেশের প্রায় সব বিভাগেই তাপমাত্রা কমেছে।

সর্বশেষ খবর