বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
পজেটিভ বাংলাদেশ

গোল্ডেন রাইস উদ্ভাবন দেশীয় বিজ্ঞানীদের

বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল বিশ্বে ভিটামিন ‘এ’-এর ঘাটতি একটি মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ শিশু এবং গর্ভবতী ভিটামিন-এ অভাবজনিত অপুষ্টির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। আর এই ভিটামিন-এ মানবদেহে সহজেই পৌঁছে দিতে এবং এর ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ২০১২ সাল থেকে গবেষণা চালায়। গবেষক ড. পার্থ সারথী বিশ্বাস ও ড. মো. মাকসুদুল হক দীর্ঘ সময় গবেষণা করে ‘গোল্ডেন রাইস’ নামের একটি নতুন ধানের বীজ উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছেন। এখন শুধু অপেক্ষা নতুন এই ধানের বীজ ‘গোল্ডেন রাইস’ ভোক্তা ও কৃষকের হাতে পৌঁছানো। গোল্ডেন রাইস হলো, বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ অনন্য এক ধরনের ধান। এ ধানের চাল সোনালি বর্ণের। বিটা-ক্যারোটিন মানুষের শরীরে প্রয়োজন অনুযায়ী ভিটামিন-এ-তে রূপান্তরিত হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে ভুট্টা থেকে সংশ্লিষ্ট জিন সন্নিবেশ করে এ ধান উদ্ভাবন করা হয়েছে। ভিটামিন-এ এর ঘাটতিজনিত স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবিলার মহৎ উদ্দেশে উদ্ভাবকরা এশিয়ার দরিদ্র ও সম্পদবঞ্চিত কৃষকদের স্বত্ব¡বিহীন উপহার হিসেবে গোল্ডেন রাইস দান করেন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) গবেষকরা জানান, সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, এক কাপ গোল্ডেন রাইসের ভাত একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দৈনিক ভিটামিন-এ এর চাহিদার অর্ধেক পূরণ করতে সক্ষম। এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও ভিটামিনের অভাবে ভোগেন। শুধু তাই নয়, উচ্চবিত্ত পরিবারের লোকজনও এর ঘাটতি পূরণ করতে পারছেন না। এমনকি সরকার কর্তৃক পরিচালিত ভিটামিন-এ ক্যাম্পিং করার পরও দেশের প্রায় ২৫ ভাগ শিশু ভিটামিট-এ এর অভাবে থাকেন। আর ভিটামিন-এ এর অভাবে মানবদেহের নানা ধরনের রোগ দেখা দেয়। আর এসব চিন্তা নিয়েই গবেষণা শুরু হয় বলে জানান প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. পার্থ সারথী বিশ্বাস। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষ ভাতের ওপর নির্ভরশীল। সাধারণ মানুষ তিনবেলা পেট ভরে ভাত খেলেই চলে। তাদের আর কিছুর প্রয়োজন হয় না বলে মনে করেন। কিন্তু শুধু ভাত থেকে শরীরের পুষ্টি ও ভিটামিনের পূরণ হয় না।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক (ডিজি) ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গোল্ডেন রাইস নিয়ে আমাদের গবেষকরা খুব সাবধানতার সঙ্গে কাজ করছেন। কৃষকদের হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত আমাদের গবেষকরা গোল্ডেন রাইস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যাচ্ছেন। একটু সময় লাগবে এ নতুন উদ্ভাবিত ধানের জাত ভোক্তা ও কৃষকের হাতে দেওয়া।

সর্বশেষ খবর