মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

পণ্য-বিনোদনের সমাহার থাকছে বাণিজ্য মেলায়

দেশি-বিদেশি পণ্য ও বিনোদনের সমাহার নিয়ে আগামী ১ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শনীর সবচেয়ে বড় আসর ২০তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০১৫। মাসব্যাপী এই আয়োজনের পুরো প্রস্তুতি এখন শেষের পথে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের রংতুলির প্রলেপ দেওয়া। লাখ লাখ ক্রেতা-দর্শনার্থী ও বিদেশিদের উপস্থিতিতে এবারের মেলায় পণ্যের প্রস্তুতকারক, উৎপাদক, রপ্তানিকারক, বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের মধ্যে সম্পর্কের মেলবন্ধন ঘটবে বলে মনে করেন আয়োজকরা।
জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আয়োজিত রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এই মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এই মেলার মাধ্যমেই প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাবেন বলে মনে করেন আয়োজকরা। এবারের ডিআইটিএফের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বোস বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মেলার সব প্রস্তুতিমূলক কাজ এখন শেষের পর্যায়ে। যেটুকু বাকি আছে তা উদ্বোধনের আগেই শেষ হবে। আয়োজক ইপিবি সূত্র জানায়, এবার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় নিরাপত্তা জোরদার করতে আনসার, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি মোতায়েন করা হবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ ছাড়া ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে স্টল ও প্যাভিলিয়নে। মেলা প্রাঙ্গণে ওয়াচ টাওয়ার, আর্চওয়ে, হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর ও ভেহিকল সার্চ মিরর দিয়ে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়া হবে। এই বাড়তি নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন স্থানে শতাধিক সিসিটিভি বসানো হবে। জানা গেছে, এবারের মেলায় দেশি-বিদেশি স্টল ও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা হবে ৫০৮টি। আর মেলার নতুনত্ব থাকবে নারী উদ্যোক্তাদের পৃথক জোন। এই জোনে ২৯টি স্টলে নারী উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রয় করবেন। আর ১৪টি দেশ এবারের মেলায় তাদের পণ্য প্রদর্শন করবেন নির্ধারিত প্যাভিলিয়নে। এর মধ্যে বিদেশিদের জন্য ২০টি প্যাভিলিয়ন ও ১৯টি প্রিমিয়ার স্টল রাখা হয়েছে। একইভাবে দেশি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৫৫টি, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ৫৪টি, সাধারণ প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন ২৯টি ও সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন ১৪টি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রিমিয়ার স্টল ৫৬টি ও সাধারণ স্টল থাকবে ২২২টি। এবার কমছে ফুড স্টল। গত বছরে ৪২টি থাকলেও এবার ফুড স্টল ৩১টি ও রেস্তোরাঁ থাকছে ৬টি। গত বছরে মেলায় ১২টি দেশ অংশ নিলেও এবার ১৪টি দেশ অংশ নিচ্ছে। এসব দেশের মধ্যে থাকবে ভারত, চীন, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। আয়োজকরা জানিয়েছেন, এবার পণ্যভিত্তিক স্টল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে পোশাক, জুয়েলারি, গৃহস্থালি সামগ্রী, প্রসাধনী, খেলনা, খাদ্যসামগ্রী, কারুশিল্পসহ বিভিন্ন ধরনের একই জাতীয় পণ্যের স্টল একই স্থানে থাকবে। শিশুদের বিনোদনের জন্য দুটি পার্ক করা হবে। ইপিবি জানায়, গত বছরের মতো সুন্দরবনের আদলে এবারও মেলায় থাকছে ইকোপার্ক। তিন বছর ধরে এ পার্ক তৈরির জন্য নকশা করা হয়েছে। এ পার্কে থাকবে বাঁশের সেতু। এ ছাড়া খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চল থেকে গোলপাতা, বন্য প্রাণী ও পাখি আনা হবে। বিশেষ করে রাজহাঁস, বুনো পাখি, খরগোশ, কাঁকড়া, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছাড়া হবে এখানে। এ ছাড়া কিছু পাখি ও প্রাণীর প্রতিকৃতি থাকবে এই ইকোপার্কে। এবার প্রায় ৫ কোটি দেড় লাখ টাকায় মেলার প্রধান ফটক ও টিকিট কাউন্টার ইজারা নিয়েছে মীর ও স্বদেশ এন্টারপ্রাইজ। গত বছর ছিল ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা। তবে মেলায় প্রবেশ ফি কোনো পরিবর্তন হয়নি। প্রতিটি প্রবেশ টিকিটের মূল্য প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা রাখা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর