বুধবার, ৭ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

লাশ নিয়ে বিএনপি আওয়ামী লীগ টানাটানি

নাটোরের তেবাড়িয়ায় সোমবার গুলিতে নিহত রাকিব মুন্সি ও রায়হান আলীর লাশ নিয়ে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রীতিমতো টানাটানি শুরু করেছে। নিহতদের নিজেদের কর্মী দাবি করে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
গতকাল বেলা সোয়া ১১টায় নাটোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি বলেছেন, নিহত রাকিব মুন্সি ছাত্রলীগ কর্মী ও আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। তার ভাই মো. আনজুল নাটোর থানায় ভাই হত্যাকাণ্ডের যে অভিযোগ করেছেন সেখানেও নিজেদেরকে আওয়ামী লীগ কর্মী উল্লেখ করেছেন। এ সময় এমপি শিমুল সাংবাদিকদের নিহত রাকিবের ভাইয়ের মামলার এজাহারের কপিও সরবরাহ করেন। সংবাদ সম্মেলনে পিপি সিরাজুল ইসলাম বলেন, রাকিব মুন্সি ছাত্রলীগ কর্মী হওয়ার কারণেই গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তারা নিজেরা হাসপাতালে নিয়ে আসেন, লাশ গ্রহণ করেন এবং দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মালেক শেখ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এহিয়া চৌধুরী ও যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী আঞ্জুমান আরা পপি। অন্যদিকে দুপুর সোয়া ১টায় নাটোর জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল হক বলেন, নিহত রাকিব মুন্সি নাটোর নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের ক্রীড়া সম্পাদক এবং রায়হান সিংড়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রচার সম্পাদক। রায়হানের বাবা শামসুল হক মিঠন ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বলেন, নাটোর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর সঙ্গে অসংখ্য সভা সমাবেশে রাকিব মুন্সি অংশ নিয়েছে। যার ছবি এবং ভিডিও তাদের কাছে রয়েছে। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের ছবিও সরবরাহ করেন। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ জোর করে হাসপাতাল থেকে রাকিবের লাশ তার অফিসে নিয়ে গিয়ে সেখানেই গোসল করিয়ে নিজেদের তত্ত্বাবধানে দাফন-কাফন করেছে। আমাদের অংশ নিতে দেয়নি। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় অন্যদের মধ্যে নিহত রায়হানের বাবা শামসুল হক মিঠন, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী শাহ আলম, সহসভাপতি রহিম নেওয়াজ, প্রচার সম্পাদক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন ও নাটোর পৌরসভার মেয়র শেখ এমদাদুল হক আল মামুন উপস্থিত ছিলেন। এদিকে প্রকৃত হত্যাকারীদের আটক করতে নিহত রাকিব মুন্সির পিতা চান মুন্সি নিজেদেরকে বিএনপি সমর্থক দাবি করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল মেম্বার, নাজিম উদ্দিন ও ময়েজ আলীসহ ২৫ জন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে পৃথক এজাহার দায়ের করেছেন। মামলায় তিনি বলেছেন, তার ছেলে রাকিব ও ছেলের বন্ধু রায়হান বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার সময় প্রধান অভিযুক্ত বাবুল মেম্বার তার ছেলের বিএনপি করার সাধ মিটানোর নির্দেশ দিলে অন্য আসামিদের নিয়ে সঙ্গে থাকা দুই নম্বর আসামি নাজিম উদ্দিন বুকে গুলি করে রাকিবকে হত্যা করে। নাটোরের পুলিশ সুপার বাসুদেব বণিক বলেছেন, নিহত রাকিব মুন্সির ভাই মো. আনজুল বাদী হয়ে যে এজাহার দাখিল করেছেন তারপর নতুন করে কোনো মামলা করার সুযোগ নেই। তবে তাদের পিতার দায়ের করা এজাহার মূল মামলার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

 

সর্বশেষ খবর