সোমবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
শিবগঞ্জ

পুরুষশূন্য ১৩ গ্রাম, আতঙ্কে বাড়িঘর ছাড়ছে নারী-শিশুরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে একদিকে জামায়াত-বিএনপির জ্বালাও পোড়াও, অন্যদিকে যৌথবাহিনীর গ্রেফতার ও ভাঙচুরে আতঙ্কিত হয়ে শিবগঞ্জ-কানসাটের প্রায় ১৩টি গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। জামায়াত-বিএনপির ক্যাডারদের সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্কিত গ্রামবাসীও বাড়িঘর ফেলে পালিয়েছে। এর আগে জামায়াত-বিএনপি ক্যাডারদের অব্যাহত সন্ত্রাসের কারণে শিবগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা এলাকা ছেড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে বলে শিবগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি আতিকুল ইসলাম টুটুল খান জানান। থানা সূত্রে জানা গেছে, ২০-দলীয় জোটের অবরোধ শুরু হওয়ার দিন থেকেই কানসাট-সোনামসজিদ এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত করে জামায়াত-বিএনপি ক্যাডাররা। তারা প্রায় প্রতিদিনই সোনামসজিদ থেকে ছেড়ে আসা পণ্যবাহী ট্রাকে আগুন দেওয়াসহ পুলিশ-বিজিবির গাড়িতে বোমা হামলা চালায়। এতে ট্রাক চালক-হেলপার ও বিজিবিসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়। গত বৃহস্পতিবার শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে জামায়াত-বিএনপির ২৫ জনকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে ছাত্রদলের এক নেতা শুক্রবার ভোরা রাতে কানসাটে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এরপর শনিবার শিবগঞ্জে রাতভর অভিযান চালিয়ে যৌথবাহিনী ৪ জনকে গ্রেফতার করে। এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার যৌথবাহিনী উপজেলার রসুলপুর, শ্যামপুর, ধোবড়া ও মুসলিমপুর এলাকায় অভিযানের সময় বিভিন্ন বাড়িতে তল্লাশির নামে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। অভিযানের সময় রসুলপুর মহদীপুর এলাকার মো. ইয়াসিনের বাড়ির শোকেস, আসবাবপত্র ও ফ্রিজ ভাঙচুর শেষে একটি মোটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই এলাকার মো. আলম, একরামুল হক, আবু সুফিয়ানের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। শ্যামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা, আ. মালেক, আনসারুল ইসলাম, মংলু সরদার, জয়নাল আবেদিন, মজিবুর রহমানসহ আরও ৭-৮টি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। অন্যদিকে শাহবাজপুর- ধোবড়া এলাকায় অভিযানের সময় দুরুল হোদা, আ. মকিমের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ আরও ৫-৬টি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে দুরুল হোদা জানিয়েছেন। এই ভাঙচুরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ। ইতিমধ্যে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে সদর উপজেলার শিবগঞ্জ বাজার, মহদীপুর, কানসাট, শ্যামপুর, চামাবাজার, বাজিতপুর, বাবুপুর, ধোবড়া, হাদিনগর, শরৎনগর, মুসলিমপুর, নলডুবড়ী ও বালিয়াদিঘী গ্রাম। এ ছাড়াও আতঙ্কে শনিবার থেকে নারী ও শিশুদেরও বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে দেখা গেছে। তবে গতকাল কাউকে এলাকা ছাড়তে দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এম এম ময়নুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, অভিযানে সাধারণ মানুষকে হয়রানি বা আটক করা হচ্ছে না। যারা বোমাবাজ, দুষ্কৃতকারী এবং একাধিক মামলার পলাতক আসামি শুধু তাদের ধরতেই এ অভিযান। এ ছাড়া জামায়াত-বিএনপির লোকজনই নিজেদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে যৌথবাহিনীর নামে চালানোর চেষ্টা করছে। তবে নারী ও ও শিশুরা বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন এমন খবর তিনি জানেন না বলে জানান।

সর্বশেষ খবর