সোমবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

বোমায় ধূলিসাৎ রহিম বাদশা পরিবারের স্বপ্ন

বোমায় ধূলিসাৎ রহিম বাদশা পরিবারের স্বপ্ন

রহিম বাদশা পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে পুলিশ

সুখের স্বপ্ন দেখেছিল দরিদ্র পরিবারটি। পরের জমিতে বসত গড়ে থাকত। বাদাম বিক্রি করে সংসার চালাত। পরিবারের কর্তা রহিম বাদশা (৪৫)। ছেলেমেয়েরা বড় হচ্ছে, তাই বাদাম বিক্রি করে দুই শতক জমিও     কিনেছিলেন। কিছু টাকা পরিশোধ করা বাকি ছিল। আশা ছিল বিশ্ব ইজতেমায় বাদাম, বাঁশের তৈরি ডালি ও কুলা বিক্রির আয় দিয়ে বাকি টাকা পরিশোধ করবেন। নিজের জমিতে বাড়ি করবেন। এমন আশায় বৃদ্ধা মা রহিমা বেওয়াকে (৬৫) নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিলেন রহিম বাদশা। নতুন স্বপ্নে বিভোর ছিল পরিবারটি। ঠিক তখনই ঘটল অঘটন। অবরোধ নাশকতার বোমা পুরো স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিল মুহূর্তেই।  গত ১৩ জানুয়ারি মধ্য রাতে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বাতাসন ফতেপুর এলাকায় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে অবরোধকারীদের ছোড়া পেট্রলবোমায় কুড়িগ্রামের উলিপুর থেকে ছেড়ে আসা ‘খলিল স্পেশাল’ বাসের অন্য যাত্রীদের সঙ্গে রহিম বাদশা ও তার মা রহিমা বেওয়া পুড়ে অঙ্গার হয়ে যান। উলিপুর উপজেলার দড়িচর গ্রামের বাদাম বিক্রেতা রহিম বাদশা বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে অন্যের জমিতে বাস করতেন। দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে লিটন মিয়া (১৯) মাস দুয়েক ধরে গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করছে। ছোট ছেলে লিমন মিয়া দাঁড়িকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। মেয়ে রুমি বেগম তবকপুর ফাজিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। সবকিছু ধূলিসাৎ হওয়া এ পরিবারটির সঙ্গে গত শুক্রবার পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) এ কে এম শহীদুল হক ও র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ দেখা করেন। তারা রহিম বাদশার স্ত্রীর হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। গোটা পরিবার তখন কান্নায় ভেঙে পড়ে। আবেগাপ্লুত পুলিশের আইজি ও র‌্যাবের ডিজি নাশকতায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির আশ্বাস দেন। আইজি রহিম বাদশার ছেলেকে পুলিশে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ ব্যাপারে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি এবং কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপারকে নির্দেশও দেন।

সর্বশেষ খবর