রাজধানীতে ৪৮ ঘণ্টার হরতালে যানজট অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মহানগরীর বেশির ভাগ এলাকা ছিল যানজটের আওতায়। রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁও ট্রাফিক সংকেত (সিগন্যাল) থেকে মিরপুর সড়ক ছাড়িয়ে অন্তত চার শতাধিক গাড়ির সারি। কাকরাইল ও বেইলি রোড প্রান্ত থেকে আসা এসব গাড়িকে স্থবির হয়ে থাকতে হলো লম্বা সময়। শাহবাগ-বাংলামোটরে গাড়ির বেশ চাপ ছিল। গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টায় এই ছিল শাহবাগে হরতালের চিত্র। পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের (পশ্চিম) উপ-কমিশনার ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আমরা সড়কে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়েছি। ফলে দিন দিন সব ধরনের যানবাহন বাড়ছে। পাশাপাশি গভীর রাত পর্যন্ত অনেক গাড়ি চলাচল করছে। সে জন্য স্বাভাবিক সময়ের মতোই ট্রাফিক বিভাগকে কর্মব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।
গতকাল মিরপুর-মতিঝিল রুটের মিনিবাসের চালক শাহবাগের ট্রাফিক পয়েন্টে উপহাসের সঙ্গে বলেন, কিসের হরতাল? সব ধরনের গাড়ি চলছে। বিরক্ত অপর চালক বললেন, হরতাল এখন ভোঁতা হয়ে গেছে। এ সময় কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট হাত উঁচিয়ে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করছিলেন। প্রায় ২৫ মিনিট পর ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিক থেকে বাংলামোটরের দিকে আসার সিগন্যাল চালু হলো। গাড়িগুলো ধীরগতিতে চলতে চলতে খানিক পরেই থেমে গেল ফেয়ারলি হাউসের কাছে। বাংলামোটর থেকে সোনারগাঁও মোড়, ফার্মগেট, বিজয় সরণি চৌরাস্তার মোড়, গুলশান থেকে নতুনবাজার পর্যন্ত পুরোটাই যানবাহনে ভরা। তবে এ মাসের তিন দফা হরতালে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যাত্রীবাহী বাস, কাভার্ড ভ্যান, ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যায়। বিশেষ করে গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ৩৬ ঘণ্টার হরতালে এবং ৮ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি ৭২ ঘণ্টার হরতালে প্রায় স্বাভাবিক সময়ের মতো যানবাহন সড়কে নামে। এ ছাড়া মহানগরীর অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় ছাত্রছাত্রীরাও যাতায়াত করায় গাড়িগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে তুলনামূলক বেশি যানবাহন দেখা যায় মতিঝিল, গুলিস্তান, পুরানা পল্টন, তোপখানা রোড, শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, মগবাজার মোড়, বাংলামোটর, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, আগারগাঁও, শ্যামলী, মিরপুর, বনানী, বারিধারা এলাকায়। গতকাল বেলা ১১টার দিকে মতিঝিল শাপলা চত্বরে রীতিমতো যানজট ছিল। তবে সেখানে রিকশার ভিড় ছিল একটু বেশি। ভিআইপি সড়কগুলোতে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ হলেও সোনারগাঁও হোটেল এলাকা, বিজয় সরণিসহ কিছু এলাকায় তা চলছিল। বেলা ৩টার দিকেও গুলিস্তান পাতাল মার্কেটের কাছে যানবাহনের ভিড় দেখা যায়। আগামীকাল ভোর ৬টায় ৭২ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি শেষ হবে। গতকাল সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত যানবাহনের সবচেয়ে বেশি আধিক্য ছিল বিজয় সরণি মোড়, শেরেবাংলা নগর, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, কুড়িল বিশ্বরোড, রামপুরা ও আগারগাঁও আইডিবি ভবন এলাকায়। এসব এলাকায় স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বাড়তি সময়জুড়ে ট্রাফিক সিগন্যালের চারপাশে অনেক গাড়ি থেমে থাকতে দেখা যায়।