শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

তুঁত ফল স্বাদে রসে ভরপুর

তুঁত ফল স্বাদে রসে ভরপুর

তুঁত ফল। খুব রসালো ও সুস্বাদু একটি ফল। ইংরেজি নাম Mulberry। আর এ ফলটির দুই প্রজাতির বৈজ্ঞানিক নাম রয়েছে Morus nigra এবং Morus rubra। তুঁত ফল নামের সঙ্গে অনেকের পরিচিতি থাকলেও এই ফলটি এখনো  দেখেননি এমন মানুষের সংখ্যাও একেবারে কম হবে না। তবে এক সময় গ্রামবাংলার আনাচে-কানাচে প্রচুর তুঁত ফলের গাছ দেখা যেত। কিন্তু আজ এ ফলটি প্রায় বিলুপ্তির পথে। আফগানিস্তান, উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন স্থানে তুঁত ফলের চাষ করা হয়। তুঁত ফলের গাছের পাতা রেশম গুটি পোকাদের প্রিয় খাবার। তুঁত গাছ পাতা ঝরা প্রকৃতির ছোট ধরনের বৃক্ষ। পাতা ডিম্বাকার, খসখসে, পাতার প্রান্তভাগ করাতের মতো খাঁজ কাটা এবং অগ্রভাগ সুচালো। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক ফল মিলে একটি ফল তৈরি হয়। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরের কলেজ সড়কে তারেক হাসানের বাসায় একটি গাছে তুঁত ফল ধরতে দেখা গেছে। তারেক হাসানের মা শখ করে বাসায় তিনটি গাছ লাগিয়েছিলেন। সেই গাছে এখন ফল ধরা শুরু করেছে। প্রথমে কাঁচা ফলের রং সবুজ হয়। কিন্তু পাকা শুরু হলে টকটকে লাল হয়ে যায়। আর ফলটি সম্পূর্ণ পেকে গেলে কালো রং হয়ে যায়। গাছের কাঁচা-পাকা ফল খুব দৃষ্টিনন্দন দেখায়। প্রতিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য বিষয়ক গবেষক পাভেল পার্থ জানান, বরেন্দ্রভূমি, গড়াঞ্চল ও পাহাড়ি ভূমিতে তুঁত গাছ দেখা যায়। তুঁত ফল সাধারণত শিশুদের খুব প্রিয়। তাছাড়া এটি বুলবুলি, শালিক, টিয়া, দুর্গা টুনটুনি, বাবুই পাখিদেরও প্রিয় ফল।
তুঁত গাছ রেশম পোকার অন্যতম খাদ্য, রেশম পোকা ছাড়া রেশমশিল্প অসম্ভব। তুঁত গাছ পাখি, পতঙ্গ, মানুষকে এক সুতায় গেঁথে রেখেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ রেশম বোর্ডের উদ্যোগে দেশে তুঁত গাছ রোপণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকলেও রেশম শিল্পের বিকাশ ও সম্প্রসারণ না ঘটায় তুঁত গাছেরও কোনো গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। যার কারণে একটা সময় দেশজুড়ে নানা জায়গায় লাগানো তুঁত গাছগুলো এখন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। আর বেসরকারি উদ্যোগে এখন আর কেউ তুঁত গাছ রোপণ করছে না। কিন্তু শুধু রেশম নয়, বাস্তুসংস্থানের বিকাশের জন্যই তুঁত গাছ সুরক্ষা করা জরুরি। 

সর্বশেষ খবর