রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা
উৎসব

আনন্দের জোয়ারে ভাসছে পাহাড়

আনন্দের জোয়ারে ভাসছে পাহাড়

‘টুরু টুরু বাজি র-অ, বাজি বাজেত্তে, পাড়ায় পাড়ায় বেড়েবং বেক্কুন মিলিনেই, ইচ্ছা বিজু, ইচ্ছা বিজু’ (টুরু টুরু বাঁশির সুর, বাঁশি বাজছে, পাড়ায় পাড়ায় বেড়াব সবাই মিলে আজ বিজু, আজ বিজু)। এটি চাকমা সম্প্রদায়ের বৈসাবি উৎসবের প্রিয় একটি গান। পাহাড়ি তরুণীদের গান আর নাচের তালে তালে উৎসবমুখর হয়ে উঠছে রাঙামাটি। চাকমা রীতি অনুযায়ী ১২ এপ্রিল অর্থাৎ আজ ভোরে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে নদীতে ফুল ভাসিয়ে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে সূচনা করা হবে ফুলবিজুর উৎসব। কিন্তু ৩ এপ্রিল থেকেই রাঙামাটির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী উৎসবে মেতে উঠেছে। বৈসাবির উৎসাহ-উদ্দীপনায় পাহাড় এখন আনন্দের জোয়ারে ভাসছে। উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসুক-সাংগ্রাই-বিজু-বিহু (বৈসাবি) নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আয়োজন করা হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী নৃত্য-সংগীত, জুম খেলাধুলা, শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বলীখেলা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি, পণ্য প্রদর্শনী, বেইন বোনা প্রতিযোগিতা ও চাকমা নাট্যোৎসব। বৈসাবি উৎসব ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে পাহাড়ি-বাঙালিসহ ধর্ম-বর্ণ-জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সম্প্রীতির মিলনমেলা। ফুলবিজু উপলক্ষে রাঙামাটি ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আজ সকাল ৭টায় কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসানো উৎসব। পরে বয়োজ্যেষ্ঠদের স্নান ও বস্ত্রদান, ত্রিপুরা তরুণীদের গড়াই নৃত্যসহ আলোচনা সভা, সংবর্ধনা, পুরস্কার বিতরণ ও পিঠা আপ্যায়ন। পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা পাড়ায় পাড়ায় নেচে-গেয়ে উৎসবে মেতে উঠেছে। পাহাড়ি গ্রামগুলোয় এখন উৎসবের আমেজ। শহর থেকে পল্লী জুড়ে উৎসবে মুখর হয়ে উঠেছে গোটা পার্বত্যাঞ্চল। জমজমাট হয়ে উঠেছে হাট-বাজারগুলোও। আগামীকাল সোমবার মূল বিজু। তাই চলছে অতিথি আপ্যায়নের প্রস্তুতি। ফুল বিজুর দিনে মূল বিজুর প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়। পাহাড়ি নারীরা ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন বিভিন্ন কাঁচা সবজির সংমিশ্রণে পাজন, নানা ধরনের পিঠা, পায়েস, খই, নাড়ু ও সেমাই তৈরিতে।
অন্যদিকে শহর এলাকা ছাড়াও কাপ্তাইয়ে ও রাজস্থলীতে মারমা সম্প্রদায়ে ঐতিহ্যবাহী জলোৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর