বুধবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

জিনপিং ও আবের সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক আজ

এশিয়া-আফ্রিকা সম্মেলন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সকালে রওনা দিয়ে বিকালে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় পৌঁছেছেন। তিন দিনের সফরের দ্বিতীয় দিনে আজ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন ও প্ল্যানারি সেশনে দুদফায় ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা। পাশাপাশি আজই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি থেইন সেইন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেং লংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে ৫১ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। এ সময় তাকে বিদায় জানান মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও অন্যরা। পরে বিকালে জাকার্তার সুকর্ন-হাত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে ইন্দোনেশিয়ার পরিবেশ ও বনমন্ত্রী নূরবায়া বাকের, জাকার্তার গভর্নর তাজহাইয়া পুমামা, ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল কাউনাইন ও ঢাকায় ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভীরানতা আতমাদজা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। সেখানে তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়। উষ্ণ অভ্যর্থনার আনুষ্ঠানিকতা শেষে মোটর শোভাযাত্রা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জাকার্তার হোটেল বরোবুদুরে নিয়ে যাওয়া হয়। ইন্দোনেশিয়া সফরে এ হোটেলেই অবস্থান করবেন প্রধানমন্ত্রী। এশিয়া-আফ্রিকা সম্মেলনের ৬০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এবারের সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট ও জাপানের প্রধানমন্ত্রীসহ ২৮টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান অংশ নিচ্ছেন। আছেন এশিয়া-আফ্রিকা মহাদেশের ৬৬টি দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা। এ ছাড়া ছয়টি আন্তর্র্জাতিক সংস্থা যথা- জাতিসংঘ, আসিয়ান, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, আফ্রিকান ইউনিয়ন, আরব লিগ ও সাউথ সেন্টারের প্রতিনিধিরাও সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। এ উপলক্ষে জাকার্তায় সাজ সাজ রব। অবশ্য সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় গত রবিবার অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠকের মাধ্যমে। এর পরদিন মন্ত্রিপর্যায়ের বৈঠকেও বসেছিল সদস্য দেশগুলো। এসব বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সচিব প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এ উপলক্ষে তারা আগেই ইন্দোনেশিয়ায় এসেছেন। আগাম ২৪ এপ্রিল শেষ হবে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা। তবে শীর্ষ নেতৃত্বদের নিয়ে মূল আনুষ্ঠানিকতা আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য, বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে সাউথ সাউথ সহযোগিতা জোরদার করা। সফরসূচি অনুসারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সেখানে ভাষণে টেকসই উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করবেন তিনি। এ ছাড়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের দুই মহাদেশের দুই-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়ার বিষয়টি তুলে ধরবেন। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সাফল্যের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরবেন। আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর সম্মেলন কক্ষের সাইডলাইনে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেং লং, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি থেইন সেইনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। বিকালে প্ল্যানারি সেশনেও ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল শীর্ষ সম্মেলনে প্ল্যানারি সেশন-৪ এ সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। এই দিন ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী রামি হামদাল্লাহ, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি জোকো উইদোদো এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা। রাতে প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো ও ফার্স্টলেডি ইরিয়ানা জোকো উইদোদো আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ নৈশভোজে অংশ নেবেন। এই দিন রাতেই ঢাকার উদ্দেশে ইন্দোনেশিয়া ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

সর্বশেষ খবর