বুধবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

হালদায় ডিম সংগ্রহকারীদের মাথায় হাত

হালদায় ডিম সংগ্রহকারীদের মাথায় হাত

দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে রুই জাতীয় মা-মাছ। বহু প্রতীক্ষার মা-মাছ ডিম ছাড়ার পরও প্রত্যাশিত ডিম সংগ্রহ করতে না পারায় হালদার দুই তীরের জেলেদের ডিম সংগ্রহ উৎসব পরিণত হয়েছে বিষাদে। প্রত্যাশিত ডিম সংগ্রহ করতে না পারায় বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হবে ডিম সংগ্রহকারীদের। জানা যায়, সোমবার রাতে মা-মাছ ডিম ছাড়বে খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন পয়েন্টে তিন শতাধিক নৌকা ও ডিম ধরার সরঞ্জাম নিয়ে অবস্থান নেন সংগ্রহকারীরা। রাত দেড়টার দিকে রুই জাতীয় মা-মাছ ডিম ছাড়ে। এরপর রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার আজিমার ঘাট, সোনাইর মুখ, মাথুয়া, উত্তর মাদার্শা, দক্ষিণ মাদার্শা, দক্ষিণ গহিরা, মোবারক খীল, মদুনাঘাট, মাছুয়াঘোনা, গড়দুয়ারা, পশ্চিম গহিরা, কাগতিয়া, নাপিতের ঘাটাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে জেলে সম্প্রদায়সহ সংগ্রহকারীদের মাঝে। কিন্তু মা-মাছ প্রত্যাশিত ডিম না ছাড়ায় উৎসব রূপ নেয় বিষাদে। তাদের এখন মাথায় হাত। মৎস্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে হালদা নদী থেকে আহরিত ডিমের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৪০ কেজি। ২০১৩ সালে ৪ হাজার ২০০ কেজি এবং ২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি। এ বছর দাঁড়ায় ১ হাজার কেজিতে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও হালদা বিশেষজ্ঞ মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, সাধারণত বজ সহ প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে মা-মাছ ডিম ছাড়ে। এবার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার আগেই ডিম ছাড়ায় প্রত্যাশিত ডিম ছাড়েনি মা-মাছ। নানা কারণে মা-মাছের সংখ্যা কমে আসছে। ফলে প্রত্যাশিত ডিম সংগ্রহ করতে পারেননি জেলেরা। ডিম সংগ্রহকারী গড়দুয়ারা এলাকার মো. কামাল সওদাগর বলেন, 'এবার সাতটি নৌকা দিয়ে ডিম সংগ্রহের প্রস্তুতি থাকলেও প্রত্যাশিত ডিম সংগ্রহ করতে পারিনি। ফলে লোকসান গুনতে হবে।' কাগতিয়ার ডিম সংগ্রহকারী রোসাঙ্গীর আলম জানান, তিনি ১০টি নৌকা দিয়ে ১২ বলাতি ডিম সংগ্রহ করেছেন। পশ্চিম বিনাজুরীর পবন বড়ুয়া জানান, তিনি ১২ বালতি ডিম সংগ্রহ করেন। চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রভাতি দে বলেন, ডিম থেকে রেণু তৈরি করতে সাত হ্যাচারিতে কাজ চলছে। এ ছাড়াও ডিম সংগ্রহকারীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে কুয়া পদ্ধতিতে রেণু তৈরি করবেন।

 

 

 

 

 

সর্বশেষ খবর