প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি জোটের অবরোধ-হরতালে পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযোগপত্র দিয়ে বিচারকাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি নাশকতাকারীদের ধরতে যৌথবাহিনীর অভিযান এবং ভ্রাম্যমাণ বিচারকাজ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেন। গতকাল মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে বসে প্রধানমন্ত্রী সাতক্ষীরা ও বগুড়া জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সকালে এ নির্দেশ দেন।
মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হলো মানুষের জীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা দেওয়া। যারা পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়েছে, মানুষের ক্ষতি করেছে, মানুষের ওপর আঘাত করেছে, জীবন্ত মানুষগুলোকে যারা এভাবে দগ্ধ করেছে, এদের শাস্তি পেতেই হবে। তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না মানুষের জীবন নিরাপদ হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই একদিকে যৌথ অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে, যাতে আর সন্ত্রাস ও নাশকতা না হয়, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যদিকে যে মামলাগুলো হয়েছে- শুধু মামলা করলেই হবে না, গ্রেফতার করলেই হবে না, মামলাগুলোর যাতে দ্রুত অভিযোগপত্র দিয়ে বিচারকাজ সম্পন্ন হয় সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা না হলে কয়েকদিন পর আবার জামিনে বের হয়ে এসে ওই একই কাজ করবে। প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় পর্যায়ে পণ্য উৎপাদন বাড়ানো, পণ্যের বহুমুখীকরণ ও রপ্তানি বাড়ানোর জন্য প্রক্রিয়াকরণের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশনা দেন স্থানীয় প্রশাসনকে। খেলাধুলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম গড়ে তোলা হবে। এ জন্য স্কুল-কলেজের মাঠের বাইরে আলাদা জায়গা নির্দিষ্ট করার জন্য নির্দেশ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সাধারণ নির্বাচন ঘিরে সাতক্ষীরা ও বগুড়ায় বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবের কথাও স্মরণ করে ওই সময় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী সাতক্ষীরা ও বগুড়া জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার সময় জয়পুরহাট, ঝিনাইদহ, নড়াইল ও সিরাজগঞ্জ জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি এবং খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন।
নেপালের পাশে থাকবে বাংলাদেশ : এদিকে সকালে সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে নেপালের ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালের পাশে থাকার প্রতিশ্র“তি দিয়ে মন্ত্রিসভাকে জানান, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় নেপালকে সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে মেডিকেল টিম, সুপেয় পানিসহ বিভিন্ন সাহায্য পাঠানো হয়েছে। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভা বৈঠকে বলেছেন, নেপালে সাহায্য পাঠানোর জন্য কোনো দেশ চাইলে তাকে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করতে দেওয়া হবে। এরকম নির্দেশনা দেওয়া আছে। এ ছাড়া সৈয়দপুর বিমানবন্দরকেও প্রস্তুত থাকার জন্য নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।