মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

ভোটের আগের দিন যেভাবে কাটল প্রার্থীদের

নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী ভোটের আগের দিন প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারেন না। এ কারণে চলমান সিটি নির্বাচনে রবিবার মধ্যরাত থেকে প্রার্থীদের প্রচারণা বন্ধ রয়েছে। তবে জনসম্মুখে প্রচারণা বন্ধ থাকলেও গতকাল দিনরাত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন চালিয়ে যান। এ ছাড়া বেশির ভাগ প্রার্থীই তাদের পোলিং এজেন্ট নিয়োগ দানসহ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে ভোটের দিন করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা দেন। প্রার্থীদের বেশির ভাগই ঘরোয়া বৈঠক করেন। কেউ আবার বাসায় পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। তবে এ সময় তারা সমর্থক ও দলের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের পক্ষে প্রচারণা চালান তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস। গত কয়েক দিন ভোটারদের কাছে তিনি ভোটের জন্য লাগাতার আবেদন করেন। তবে গতকাল সকাল থেকেই বাসায় কাটিয়েছেন। তিনি সাংবাদিক ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রচারণা চালানোর সময় সহযোগিতার জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ভোট শেষেও তিনি নগরবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবেন। কোনোরকম বাধা না এলে মির্জা আব্বাসের সঙ্গে শাহজাহানপুর কেন্দ্রে ভোট দেয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।
ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক গতকাল ব্যতিক্রম দিন কাটিয়েছেন। তিনি বাসায় পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আনিসুল হক পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ছবি তুলে তা আপলোড দিয়ে ক্যাপশনে লেখেন : টানা প্রচারণা চালিয়ে তিনি বেশ ক্লান্ত। তাই ভোটর আগের দিন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে বিরতিহীন প্রচারণা চালানোর পর গতকাল প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই দিন কাটান ঢাকা দক্ষিণের আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন। পুরান ঢাকার নাজিরাবাজারের বাসায় স্থানীয় নেতা-কর্মী, প্রতিবেশী ও পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের মাধ্যমেই দিনের বেশির ভাগ কাটান তিনি। সাঈদ খোকন বলেন, ‘প্রচারণায় অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা। আশা করি দক্ষিণ ঢাকাবাসী আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না।’ এদিকে, উত্তরের মেয়র প্রার্থী জোনায়েদ সাকির প্রচারকর্মীদের ওপর গতকাল উত্তরা এক নম্বর ওয়ার্ডে হামলা চালানো হয়। এতে ছাত্র ফেডারেশনের এক কর্মী আহত হন। জোনায়েদ সাকি হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন। তবে জোনায়েদ সাকি ফেসবুকে তার প্রচারণা চালান। তিনি ভোটারদের কাছে ভিডিওবার্তার মাধ্যমে ভোটের আবেদন করেন। তার পক্ষে বিভিন্ন শিল্পীও ভিডিওবার্তায় ভোটের আবেদন করেন। ঢাকা উত্তরের আহত মেয়র প্রার্থী মাহী বি চৌধুরী সারা দিন তার বারিধারা ৯০ পার্ক রোডের বাসভবনে বিশ্রাম নিয়েছেন। জনসম্মুখে প্রচারণা চালানোর সুযোগ না থাকলেও ফেসবুকে প্রচারণা চালিয়ে যান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। তার ফেসবুক পেজে ‘তাবিথ আউয়াল ফর মেয়র’ এভাবেই ঘণ্টায় ঘণ্টায় প্রচারণা চালানো হয়। ‘আর কত দখলদারি চেয়ে দেখা? এবার গড়ব নতুন ঢাকা। নতুন প্রজন্ম-নতুন ঢাকা/তাবিথ আউয়ালকে বাস মার্কায় ভোট দিন’ এমন স্লোগান দিয়ে প্রচারণা চলে তাবিথ আউয়ালের পক্ষে। ভোটের আবেদন জানিয়ে তৈরি করা হয় ভিডিওবার্তাও। এ ছাড়া গতকাল তিনি নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং কর্মকর্তা, স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশ কর্মকর্তার কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। উত্তরের মেয়র প্রার্থী আবদুল্লাহ আল ক্বাফী রতন তার বাসায় নেতা-কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করেন। সকালে সমর্থকরা পল্টন মৈত্রী ভবনে রবিবার নাখালপাড়ার নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। তবে ক্বাফী উপস্থিত ছিলেন না। তিনি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে পোলিং এজেন্ট নিয়োগ দেন। তাদের সঙ্গে করেন ঘরোয়া বৈঠক। এদিকে ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী নাদের চৌধুরী নিয়ম ভেঙে গতকাল বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা চালিয়েছেন। দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী বজলুর রশিদ ফিরোজ বাসায় এজেন্ট ও প্রচারকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি পল্টনের তোপখানা রোডের কার্যালয়ে এজেন্টদের সঙ্গে বৈঠক করে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির দক্ষিণের প্রার্থী হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন ও উত্তরে বাহাউদ্দিন বাবুল এবং দক্ষিণে ইসলামী আন্দোলন সমর্থিত প্রার্থী ও উত্তরের প্রার্থী শেখ ফজলে বারী মাসউদ মুঠোফোনে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
অনেক নেতা-কর্মী বাসায় এলে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেন।

সর্বশেষ খবর