টাঙ্গাইল সদরের রসুলপুরে জমেছিল শতবর্ষের ‘জামাইমেলা’। গত শনি ও রবিবারের এ মেলায় ছিল ব্যাপক আয়োজন। জামাইদের জমজমাট আড্ডা ছাড়াও বসেছিল গ্রামীণ পণ্যের পসরা।
প্রতিবছর বাংলা মাস ধরে ১২ ও ১৩ বৈশাখ এ মেলার আয়োজন করা হয়। মুল মেলা দুইদিন চললেও ফার্নিচার মেলা চলে মাসব্যাপী। রসুলপুরের বাছিরণ নেছা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজন করা হয় এ মেলার। ৩০ গ্রামের কয়েক লাখ লোকের সমাগম ঘটে মেলায়। এবারও উৎসবমুখর পরিবেশে মেলা হয়। পার্শ্ববর্তী এলাকা ছাড়াও টেকনাফ-তেঁতুলিয়া থেকে পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা আসেন। মেলায় আসবাবপত্রের স্টলই ছিল শতাধিক। এ ছাড়া ছিল মিষ্টি, আকড়িসহ অন্যান্য খাবার, গৃহস্থালি জিনিসপত্র এবং বাচ্চাদের খেলনার স্টল মিলে সহস্রাধিক স্টল। এসব স্টলে প্রায় কোটি টাকার পণ্য বেচা-কেনা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বরদের নিয়ে এ মেলার আয়োজন করা হয় বলে মেলাটি জামাইমেলা নামে পরিচিতি পেয়েছে। দুই দিনব্যাপী এ মেলার প্রথম দিন হয় জামাইমেলা, আর দ্বিতীয় দিন হয় বউমেলা। মেলাকে সামনে রেখে বিবাহিত মেয়েরা তাদের বরকে নিয়ে বাবার বাড়ি আসেন। জামাইকে মেলা উপলক্ষে বরণ করার জন্য শাশুড়িরা কয়েক মাস আগে থেকে নানা প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। মেলার সময় জামাইয়ের হাতে কিছু টাকা তুলে দেন শাশুড়িরা। সেই টাকার সঙ্গে আরও টাকা যোগ করে জামাইরা মেলা থেকে মাটির বড় কলসি ভরে কেনেন চিড়া, মুড়ি, আকড়ি, মিষ্টি, জিলাপিসহ নানান জিনিসপত্র। মেয়েরা কেনেন ঘর সাজানোর নানা তৈজসপত্র। জামাইয়ের কেনা মিষ্টি বিলি করা হয় আশপাশের বাড়িতে। সোহাগ নামের স্থানীয় একজন জানান, মেলার সময় রসুলপুরসহ আশপাশের গ্রামগুলোর বিবাহিত সব মেয়ে জামাইকে নিমন্ত্রণ করা হয়। তাদের পরিবারের সদস্যদেরও ডাকা হয়। সাত দিন আগে থেকেই জামাইরা আসতে শুরু করেন শ্বশুরবাড়িতে।