বুধবার, ১৭ জুন, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্রাইভেটাইজেশন কমিশন ও বিনিয়োগ বোর্ড এক হচ্ছে

ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নয়নে ‘অকার্যকর’ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত বিনিয়োগ বোর্ড (বিওআই) ও প্রাইভেটাইজেশন কমিশন (পিসি) একীভূত হচ্ছে চলতি বছরই। ইতিমধ্যে উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুনর্বাসন বা পদায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রাইভেটাইজেশন কমিশনকে শিগগিরই বিলুপ্ত করা হতে পারে। আর রাষ্ট্রায়ত্ত লোকসানি কারখানা দেখাশোনা এবং সেগুলোর বেসরকারিকরণের জন্য বিনিয়োগ বোর্ডের একটি শক্তিশালী উইং খোলা হতে পারে। এ দুটি বিষয় মাথায় রেখেই কাজ করছে জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞার কাছে পাঠানো হয় বেশ কিছু দিন আগে। অর্থমন্ত্রী গত ৪ জুন বাজেট বক্তৃতায়ও বিষয়টি তুলে ধরেন। পদাধিকারবলে প্রধানমন্ত্রী পিসি ও বিওআই দুই প্রতিষ্ঠানেরই চেয়ারম্যান। অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় দুজন দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিষ্ঠান দুটি একীভূত হলে একজন ব্যক্তিই হবেন এর প্রধান। যিনি মূলত বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান থাকবেন। আর বিনিয়োগ বোর্ডের একটি উইং খোলা হবে, যেখানে একজন অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি কাজ করবেন নির্বাহী চেয়ারম্যানের অধীনে। এতে বিনিয়োগ বোর্ডের কর্মকাণ্ড শক্তিশালী হবে বলে ধারণা সরকারের। সূত্রমতে, প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের দৃশ্যমান কোনো কাজ নেই। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যেখানে বিওআই ও পিসির অগ্রণী ভূমিকা থাকার কথা সেখানে প্রতিষ্ঠান দুটি বছরের বেশির ভাগ সময় থাকে নিষ্ক্রিয়। এ ছাড়া এক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অন্যটির মতের মিল না হওয়ায় যখন-তখন দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। আর প্রধানমন্ত্রী শীর্ষ কর্মকর্তা হওয়ায় কর্মকর্তারা সবসময় তার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকেন। তা ছাড়া লোকসানি প্রতিষ্ঠানের বেসরকারিকরণ নিয়ে একাধিক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে স্নায়ু যুদ্ধও চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বেসরকারি খাত চাঙ্গা করতে ১৯৯৩ সালে প্রাইভেটাইজেশন বোর্ড গঠন করা হয়। ২০০০ সালে একে পুনর্গঠন করে প্রাইভেটাইজেশন কমিশন করা হয়। বর্তমানে এ কমিশনে রয়েছেন ৭০ থেকে ৭৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। তবে এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির অর্জনের খাতা কার্যত শূন্য। অন্যদিকে, দেশে সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ খাত বিকাশের জন্য ১৯৮৯ সালে বিনিয়োগ বোর্ড প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন এ বোর্ডের জন্য ৫৯০টি পদের প্রস্তাবনা থাকলেও লোকবল দেওয়া হয় ৪৯৫ জন। বর্তমানে বোর্ডের ৩৫৯টি পদই শূন্য। বোর্ড চলছে মাত্র ১৩৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়ে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে নানামুখী সংকটে অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বিনিয়োগ বোর্ড।

সর্বশেষ খবর