সোমবার, ২৭ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

কোন্দলে বিএনপি হ-য-ব-র-ল

একসময় ফরিদপুর জেলা ছিল বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটি। কিন্তু দিনের পর দিন সম্মেলন না হওয়া এবং দলীয় কোন্দল তীব্র থেকে তীব্রতর হওয়ায় এখন দলটির সাংগঠনিক শক্তি বেশ হ্রাস পেয়েছে। কোন্দলের কারণে দলটির এখন হ-য-ব-র-ল অবস্থা। সরকারবিরোধী আন্দোলনে হাতে গোনা কয়েকজন নেতা ছাড়া কাউকেই মাঠে দেখা যায় না। সর্বশেষ ২০০৮ সালে সেই যে সম্মেলন হলো, এরপর আর হয়নি। এতে করে হতাশায় ভুগতে ভুগতে ক্ষুব্ধ হয়ে দলত্যাগ করেছেন অনেকেই। কেউ আবার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন।
ফরিদপুর জেলা বিএনপিতে একাধিক গ্রুপ এখনো সক্রিয়। কমপক্ষে চারটি গ্রুপ একে অন্যের বিরুদ্ধে কাজ করছে। তাই আন্দোলন-সংগ্রামে জোর পাচ্ছেন না দলটির নেতা-কর্মীরা। জেলা বিএনপিতে দুটি গ্রুপ বেশ শক্তিশালী। দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের অনুসারীরাই মূলত ফরিদপুর জেলা বিএনপির কর্মকাণ্ড টিকিয়ে রেখেছেন। তা ছাড়া দলটির সম্পাদক পর্যায়ের এক তরুণ নেতা হামলা-মামলায় জর্জরিত হয়েও রাজপথে থাকছেন। দলের মাঝে গ্রুপিং এবং নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় না থাকায় রাজনীতির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন অনেকেই। দলের বেশির ভাগ নেতা-কর্মীই বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্দোলনের চেয়ে দলকে সংগঠিত করার পক্ষপাতী। তাদের দাবি- সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি করা হোক। যারা বিগত দিনে রাজপথে থেকে লড়াই সংগ্রাম করেছেন, জেল-নির্যাতন সহ্য করেছেন এমন নেতাদের দিয়ে একটি কমিটি করার দাবি উঠেছে তৃণমূল থেকে। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দাবি- বর্তমান কমিটি দিয়ে আর যাই হোক, আন্দোলন-সংগ্রাম হবে না। দলের একাংশের নেতাদের অভিযোগ, দলের প্রভাবশালী একটি পক্ষ সরকারবিরোধী আন্দোলন করছে লোকদেখানো। কখনই তারা রাজপথে সোচ্চার নয়। প্রভাবশালী এই নেতাদের নামে একটি মামলাও নেই। অথচ অনেক নেতা-কর্মী আছেন যারা মামলার খড়গ মাথায় নিয়ে ফরিদপুর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। কেউ বা ফরিদপুরে থাকলেও আত্মগোপনে থাকছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা বলেন, দলটির এখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থা। এক যুগ ধরে যদি দলের সম্মেলন না হয় তাহলে সেই দলে নতুন নেতৃত্ব উঠে আসবে কীভাবে? নতুন নেতৃত্ব উঠে না আসায় সাংগঠনিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে দলটি। দলে গ্রুপিং থাকার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, যে দলের নেতারা কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে পারেন না, অভয় দিতে পারেন না, মামলা হলে পাশে গিয়ে দাঁড়ান না, সেই নেতাদের দিয়ে আর যাই হোক দল চলে না। ফলে হতাশা নিয়ে অনেকেই সরকারি দলে যোগ দিয়েছেন। যোগদানের ‘পাইপলাইনে’ রয়েছেন অনেক নেতা। দলকে সুসংগঠিত করতে হলে নতুন নেতৃত্ব আনতে হবে। অচিরেই সম্মেলন দিয়ে নতুন কমিটি করার দাবি জানান তিনি। সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি হবে- এমন বিশ্বাসের ওপর ভর করে দলের বেশ কয়েকজন নেতা তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে কমপক্ষে এক ডজন নেতা ইতিমধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

সর্বশেষ খবর