কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে ঢাকার নিম্নাঞ্চল। শহরসংলগ্ন বুড়িগঙ্গা, বালু, তুরাগ, টঙ্গী খালের পানিও বাড়ছে এবং এ পানি নিম্নাঞ্চলে ঢুকতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। বিশেষ করে ঢাকার দক্ষিণ-পূর্ব, পশ্চিম ও উত্তরাংশে রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়ি পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে। হঠাৎ বন্যায় নগর জীবনের একাংশে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।
জানা গেছে, যাত্রাবাড়ীর উত্তর-দক্ষিণ এবং পূর্বাংশ বাঁধ এলাকা দনিয়া, কাজলা, শনিরআখড়া, বাকেরপাট, রায়েরবাগ, মিরাজনগর, মোহাম্মদবাগ, মাতুয়াইল এলাকার অলিগলি এখন পানিতে নিমজ্জিত। ভারি বর্ষণে এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক বাসায়ও পানি উঠেছে। এ ছাড়া পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে পানি বাড়ছে রাজধানীর পূর্বাঞ্চল লাগোয়া বালু নদে। দক্ষিণ-পূর্বের শীতলক্ষ্যা নদীতেও পানি অনেক বেড়েছে। এতে নদীপাড়ের পায়ে চলার পথ ডুবে গেছে। সাইনবোর্ড, মাতুয়াইল, ডেমরা, ভূইগর এলাকা ছাড়াও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) বাঁধের ভিতরে বৃষ্টির পানি আটকে আছে। এসব ঘনবসতি আবাসিক এলাকার লোকজন পানিবন্দী রয়েছেন। রাজধানীর নিম্নাঞ্চল কাজীবাড়ি ও দুয়ারাপাড়ও প্লাবিত হয়েছে। একই অবস্থা পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিমোহনী, দাসাকান্দি, ফকিরখালী, বেরাইদ এলাকায়। বালু-শীতলক্ষ্যার পশ্চিমপাড়, ডেমরার আমুলিয়া, মেন্দিপুর, কায়েতপাড়া ও পাইটির নিম্নাঞ্চলও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। মাণ্ডা, নন্দীপাড়া সেতুর পূর্ব প্রান্ত ও নতুনবাজার এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে আছে।
তুরাগ থানার হরিরামপুর ইউনিয়নের বাওনিয়া, উলুদাহ এলাকার অনেক অংশ জলমগ্ন হয়ে আছে। রামপুরা থানার মেরাদিয়া, খিলগাঁওয়ের ত্রিমোহনী, মাদারটেক, শেখেরটেক এলাকারও একই অবস্থা।
৩ নম্বর সতর্ক সংকেত
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত মৌসুমি নিুচাপটি সামান্য পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের দক্ষিণাংশে সক্রিয় থাকায় খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজখুলনা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, কয়েকদিনের অতি বর্ষণে খুলনা নগরীর নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা। জলাবদ্ধতার কারণে উপজেলাগুলোতে শত শত একর জমির আমন বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। পাইকগাছা ও দাকোপে প্লাবিত হয়ে ভেসে গেছে অসংখ্য চিংড়ি ও সাদা মাছের ঘের। পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান স ম বাবর আলী জানান, অতি বর্ষণে ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টিই কোমর পানিতে ডুবে আছে। এর মধ্যে চাঁদখালী ইউনিয়নের অধিবাসীর করুণ দশা হয়েছে। হাজার হাজার একর ফসলি জমি ডুবে গেছে। সাদামাছ ও চিংড়ি মাছের ঘের ভেসে গেছে। ডুবন্ত ইউনিয়নগুলোতে খাদ্য ও সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণের জন্য জেলা প্রসাশককে জানানো হয়েছে।