বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

কোণঠাসা অবস্থায় জাতীয় পার্টি

রাঙামাটিতে জাতীয় পার্টি এখন কোণঠাসা অবস্থায়। সাংগঠনিক অবস্থা নড়েবড়ে। নেতা-কর্মীদের অনেকেই কথা বলছেন রাজনৈতিক বিষয়বহির্ভূত। তারা বলছেন, গত এবং বর্তমান মহাজোট সরকারের শরিক দল জাতীয় পার্টি। কিন্তু রাঙামাটিতে সরকারে কোনো মূল্যায়ন নেই তাদের। জেলার গুটিকয়েক শীর্ষনেতা স্থানীয় পর্যায়ে কিছু কিছু সরকারি সুবিধা পেলেও বঞ্চিত সাধারণ নেতা-কর্মীরা। ফলে এসব নেতা-কর্মীর দল নিয়ে আর মাথাব্যথা নেই। কয়েকজন দিয়ে পার্টি আছে নামে। কাজে কোনো গতি নেই। নেই প্রাণচাঞ্চল্য। দলের রাঙামাটি জেলা সভাপতি হারুনুর রশীদ মাতব্বর বলেন, জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের অংশীদার। রাঙামাটিতে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড়া মহাজোটের আর কোনো দল নেই। কাজেই রাঙামাটিতে সরকারের যে কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জাতীয় পার্টির অংশীদারিত্ব প্রাপ্য অধিকার। অথচ সরকারের গত মেয়াদে রাঙামাটিতে কেবল আওয়ামী লীগের লোকেরাই সব ক্ষেত্রে লুটেপুটে খেয়েছে। টেন্ডারবাজি, চাকরিতে নিয়োগ, খাদ্যশস্য লুটপাটসহ বিভিন্ন প্রকল্পে কেবল আওয়ামী লীগের লোকজনই সুফল পেয়েছে। আমরা শরিক দল হিসেবে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশীদারিত্ব চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা উন্নয়নের আড়ালে লুটপাট করতে আমাদেরকে কোথাও রাখতে চায় না।
জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফ : পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়নে সক্রিয় হয়ে উঠেছে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। সন্তু লারমার নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলনে নেমেছে সংগঠনটি। পালন করছে বিভিন্ন কর্মসূচি। অন্যদিকে সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদারে তৎপর হয়ে উঠেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও জনসংহতি সমিতি এমএন লারমার (সংস্কারপন্থি) বিদ্রোহী গ্রুপ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজনৈতিক মতভেদের কারণে বর্তমানে জনসংহতি সমিতি দুটি গ্রুপে বিভক্ত। মূলধারার নেতৃত্বে রয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। অপর দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য রূপায়ণ দেওয়ান, সুধাসিন্ধু খীসা, তাতিন্দ্র লাল চাকমা ওরফে পেলে, অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমাসহ অন্যরা। অন্যদিকে পার্বত্য চুক্তির বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) তৎপর পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন নিয়ে। এর বিপরীতে বাঙালিভিত্তিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য যুবফ্রন্ট ও পার্বত্য বাঙালি ছাত্রঐক্য পরিষদও বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে তৎপর। ফলে এখানে একটি সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
জনসংহতি সমিতির নেতারা বলছেন, জুম্ম জনগণকে নিয়ে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নসহ আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলন জোরদার করছে জনসংহতি সমিতি। গত নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জেএসএসের এখন লক্ষ্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়নের আন্দোলনসহ জুম্ম জনগণের আÍনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠা ও পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রমকে জোরদার করা।  এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের আরেক আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) চাইছে পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন। তারাও এ লক্ষ্যে জোরালোভাবে তৎপর হয়ে উঠেছে।

সর্বশেষ খবর