শুক্রবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিএনপি থেকে যুবলীগে এসেই বেপরোয়া শ্যামল

বিএনপি থেকে যুবলীগে এসেই  বেপরোয়া শ্যামল

একসময়ের ছিঁচকে ছিনতাইকারী বদরুল আলম শ্যামল চারদলীয় জোট সরকার আমলে যোগ দেন বিএনপিতে। ওই সময় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় গড়ে তোলেন সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র, যাদের কাজ ছিল ছিনতাই আর চুরি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ভোল পাল্টে শ্যামল যোগ দেন যুবলীগে। এরপর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বেপরোয়া হয়ে ওঠেন শ্যামল। তার অপরাধ কর্মকাণ্ডে পুলিশ প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তা নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছিলেন, যে কারণে তার ওই অপরাধী চক্র পরিণত হয় শক্তিশালী চোরাচালান চক্রে। এ চক্রের কাছেই এখন জিম্মি দেশের অত্যন্ত স্পর্শকাতর স্থাপনা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বিভিন্ন সূত্র জানা গেছে, চারদলীয় জোট সরকার আমলে বদরুল আলম শ্যামল যোগ দেন বিএনপিতে। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকলেও লবিং-গ্রুপিং করে হয়ে যান বিমানবন্দর থানা জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক দলের (জাসাস) সহ-সভাপতি। ক্ষমতার দাপটে ওই সময় বিমানবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীর খাতায় নাম লেখান তিনি। এরপর বিমানের অসাধু চক্রের হাত ধরে শুরু হয় তার অবৈধ কর্মকাণ্ড। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছোটভাই প্রিন্সকে স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় করে তিনি জড়িয়ে পড়েন চোরাচালানে। নিজের ‘এসএমআই ওয়ার্ল্ডওয়াইড এক্সপ্রেস কুরিয়ার’ সার্ভিসের আড়ালে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে সোনা, আমদানি-নিষিদ্ধ ওষুধ, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করেন। ভাই প্রিন্সসহ অন্যতম সহযোগী বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইয়াসিন, জসিম উদ্দিন তফাদার, মঞ্জুর হোসেন পাটোয়ারীকে সামনে রেখে চলে আসছিল তার এ অবৈধ ব্যবসা। এ সময় চোরাচালানের পণ্য বিমানবন্দরে আটকে গেলে কাস্টমস কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করে তা ছিনিয়ে নেওয়ার কাজ করত ইয়াসিন, জসিম ও মঞ্জুর। জসিম উদ্দিন তফাদার ২০১২ সালের ৩ মে বিমানবন্দর শাখা যুবদলের সহ-সভাপতি হন। এর আগে ইয়াসিন জাসাসের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। এই তিনজনও দল বদল করে এখন ক্ষমতাসীন। আর তাদের ব্যবহার করে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন শ্যামল। সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ফের আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বদরুল আলম শ্যামল নিজের পূর্বপরিচয় গোপন করে যুবলীগের নেতা বনে যান। একসময়ের বিএনপি নেতা এখন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়ে বিমানবন্দরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। পোস্টার-ফেস্টুনও সাঁটিয়েছেন রাজধানীর অনেক এলাকায়। সরকারি দলের পদবি পেয়ে সহযোগীদের পেছনে রেখে এখন নিজেই চোরাচালান সিন্ডিকেটের গডফাদার।

সর্বশেষ খবর