শুক্রবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

কমিটি বদলেও ব্যর্থ বিএনপি

একবার কমিটি করে তা বদলানোর ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে মানিকগঞ্জ বিএনপি। ফলে দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে দল চলছে সাবেক মন্ত্রী হারুনার রশীদ খান মুন্নুর মেয়ে আফরোজা খান রিতা ও প্রয়াত মন্ত্রী শামসুল ইসলাম খান নয়া মিয়ার ছেলে মঈনুল ইসলাম খান শান্তর নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের কমিটি দিয়ে। সংগঠকরা এ কমিটির পরিবর্তন চাইলেও কোনো ফল হচ্ছে না। দলীয় সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের জুনে গঠন করা জেলা কমিটি নিয়ে শুরু থেকেই সভাপতি-সম্পাদকের মধ্যে বিরোধ ছিল। পরে সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম খান জেলা কমিটির গুটিকয় সদস্য নিয়ে পৃথকভাবে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করেন। এতে মূল দলসহ সব অঙ্গসংগঠন একাধিক ধারায় বিভক্ত হয়ে যায়। নিজেরাই মারামারিসহ বিভিন্ন মামলা-পাল্টা মামলায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে অবশ্য সাধারণ সম্পাদক আর কোনো দলীয় কর্মসূচি বা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেননি। তার অসহযোগিতার জন্য দুই বছর পার হলেও আর জেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। আরেক সূত্র জানায়, সভাপতি আফরোজা খান রিতার নেতৃত্বে জেলা ছাত্রদল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও জাসাসের জেলা কমিটি গঠন করা হয়। এসব কমিটিকে সহজভাবে মেনে নেননি অন্য ধারার নেতা-কর্মীরা। সরকার পতনের আন্দোলনেও অভিভাবহীন ছিলেন নেতা-কর্মীরা। এ অবস্থায় পরিস্থিতি বুঝে অনেক নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দেন। জানা গেছে, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল, জাসাস, ছাত্রদল, শ্রমিক দলের কমিটি গঠিত হলেও দীর্ঘদিন ধরে কমিটি নেই কৃষক দল, যুবদল, মহিলা দলসহ অন্যান্য অঙ্গসংগঠনে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার পতনের আন্দোলন করতে গিয়ে তৃণমূল থেকে শুরু করে জেলার নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে পড়েন। ফলে একসময়ের শক্তিশালী অবস্থানে থাকা বিএনপির নেতা-কর্মীরা এখন দলীয় কোন্দল, হামলা, মামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে একেবারে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সহসভাপতি জামিলুর রশিদ খান বলেন, ‘তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মতামতে কাউন্সিলের মাধ্যমে সাংগঠনিক লোকদের নিয়ে জেলা বিএনপির কমিটি করা হলে দলের এ অবস্থা হতো না। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত সভাপতি-সম্পাদক এলাকায় না থাকায় প্রকৃত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্কই গড়ে ওঠেনি। এ কারণে দল শক্তিশালী না হয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে। তবে জিয়ার আদর্শের লোকদের নিয়ে ওয়ার্ড কমিটি থেকে শুরু করে জেলা কমিটি পুনর্গঠন করে দলকে শক্তিশালী করা সম্ভব।’ জেলা সভাপতি আফরোজা খান রিতা বলেন, ‘দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর পর ২০১৩ সালের ৮ জুন ১৬ সদস্যের জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর বিভিন্ন ধারায় বিভক্ত মূল দলসহ সব অঙ্গসংগঠনকে একত্রিত করতে সক্ষম হই। নেতা-কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সার্বিক সহযোগিতায় বিগত উপজেলা নির্বাচনে সব কটি উপজেলায় আমাদের প্রার্থী জয়লাভ করেন।’ তিনি বলেন, ‘মামলার কারণে পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠন করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে আশা করি, খুব শিগগিরই জেলা কমিটি ঘোষণা করা সম্ভব হবে।’

সর্বশেষ খবর