শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুর খুনিরা কে কোথায়?

২০১০ সালে পাঁচ খুনির ফাঁসির পর প্রতি বছরই বলা হচ্ছে, বাকি ছয় খুনিকেও দেশে এনে দণ্ড কার্যকর করা হবে

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত পলাতক ছয় খুনিকে আদৌ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে পাঁচ খুনির ফাঁসির রায় কার্যকরের পর থেকেই প্রতিবছর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক বাকি ছয় খুনিকেও দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকর করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত দুই খুনির অবস্থান নিশ্চিত হলেও বাকি চারজনের অবস্থান সম্পর্কে সরকারের কাছে নিশ্চিত তথ্য নেই বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র। খুনিদের একজন আবদুল আজিজ পাশা ২০০১ সালের ২ জুন জিম্বাবুয়েতে মারা গেছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নৃশংসভাবে খুনের পর তৎকালীন সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ‘ইনডেমনিটি অ্যাক্ট’ জারি করে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করা হয়। একই সঙ্গে খুনিদের বিদেশে বিভিন্ন বাংলাদেশ মিশনে চাকরি দেওয়া হয়। এর ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ‘ইনডেমনিটি অ্যাক্ট’ বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকাজ শুরু করে। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি আপিল বিভাগের রায়ে ১২ খুনির ফাঁসির আদেশ বহাল থাকলে কারাগারে আটক পাঁচ খুনি কর্নেল (অব.) সৈয়দ ফারুক রহমান, কর্নেল (অব.) সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, লে. কর্নেল (অব.) মহিউদ্দিন আহমদ (ল্যান্সার), মেজর (অব.) এ কে বজলুল হুদা এবং মেজর (অব.) এ কে এম মহিউদ্দিনকে (আর্টিলারি) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। বাকি ছয় খুনির মধ্যে লে. কর্নেল এস এইচ বি নূর চৌধুরী বর্তমানে কানাডায় এবং লে. কর্নেল এ এম রাশেদ চৌধুরী বর্তমানে আমেরিকায় পলাতক। নূর চৌধুরীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি রয়েছে। পলাতক খুনিদের মধ্যে চারজন লে. কর্নেল শরিফুল হক ডালিম, লে. কর্নেল আবদুর রশীদ, ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে সরকারের কাছে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই বলে সূত্র জানায়। তাদের চারজনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি আছে। পলাতক খুনি শরিফুল হক ডালিমও কানাডায় অবস্থান করছেন বলে একটি অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে। অপর খুনি এম এম রাশেদ চৌধুরী আগে লন্ডনে অবস্থান করলেও বর্তমানে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায়, খন্দকার আবদুর রশীদ গাদ্দাফি সরকার থাকা পর্যন্ত লিবিয়ায় অবস্থান করলেও বর্তমানে পাকিস্তানে, রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন থাইল্যান্ডে এবং আবদুল মাজেদ কেনিয়ায় অবস্থান করছেন বলে অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ১৫ আসামির মধ্যে খালাস পাওয়া তিনজনও লাপাত্তা। তাদের মধ্যে ক্যাপ্টেন (অব.) কিসমত আলী ও ক্যাপ্টেন (অব.) নাজমুল হোসেন আনসার কানাডায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। তারা দুজন জেলখানায় চার নেতা হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামি। খালাসপ্রাপ্ত অপর আসামি মেজর (অব.) আবদুল মজিদের অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা যায়নি।

সর্বশেষ খবর