শিরোনাম
শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

হাজী ক্যাম্পে বিক্ষোভ চলছেই

১১৯ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত

হাজী ক্যাম্পে বিক্ষোভ চলছেই। ভিসা জটিলতায় ১১৯ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গতকাল সকালে হজ অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন কোটাবঞ্চিত ক্ষতিগ্রস্ত হজ এজেন্সিগুলোর মালিকরা। তারা ধর্ম সচিব, পরিচালক হজ ও হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশ-হাব নেতাদের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তারা বলছেন, এ তিন কর্মকর্তা নানা অনিয়ম ও হজের নামে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত।
চলতি মৌসুমের হজযাত্রা ত্রিমুখী সংকটে নিপতিত। সংকটের মধ্যে রয়েছে ভিসা না হওয়া, নির্দিষ্ট তারিখের বিমান টিকিট না পাওয়া ও মোয়াল্লিম বারকোড ইস্যু না করা। সব মিলিয়ে আশকোনা হাজী ক্যাম্পে এখন হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। এদিকে ভিসা জটিলতার অবসান হয়েছে বলে দাবি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সৌদি দূতাবাস ই-হজ ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার আপডেট করায় জটিলতা আপাতত কেটে গেছে। গতকাল থেকে যে কোনো ফরমেটে ছবি দিলে ভিসা পাওয়া যাচ্ছে। সরকারের এমন দাবি মানতে নারাজ হজ এজেন্সিগুলো। এজেন্সি-প্রধানরা বলছেন, এখনো তারা কোটা অনুযায়ী যাত্রীদের ভিসা হাতে পাননি। এ কারণে গতকাল সকালে হজ অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন কোটাবঞ্চিত ক্ষতিগ্রস্ত হজ এজেন্সিগুলোর মালিকরা। তারা ধর্ম সচিব, পরিচালক হজ ও হাব নেতাদের পদত্যাগ দাবি করেছেন। হজ অফিস সূত্র জানায়, সৌদি সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এই প্রথম ই-হজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে অনলাইনে হজ নিবন্ধন ও ভিসা ব্যবস্থা চালু করা হয়। নতুন ব্যবস্থায় সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে সৌদি হজ মন্ত্রণালয়। নতুন ব্যবস্থায় ভিসাসংক্রান্ত কিছু সমস্যা দেখা দেয়। ১৬ আগস্ট হজ ফ্লাইট শুরু হলে ভিসাসংক্রান্ত জটিলতার বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (হজ) হাসান জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ভিসাসংক্রান্ত জটিলতা অবসানের পর গতকাল (ভোর রাত ৩টায়) বাংলাদেশ বিমানের একটি স্পেশাল হজ ফ্লাইট ১৩০ হজযাত্রী নিয়ে জেদ্দার উদ্দেশে রওনা হয়। তারা ১৭ আগস্ট ভিসা না পেয়ে আশকোনা হাজী ক্যাম্পে অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন। গতকালও আশকোনা হাজী ক্যাম্পে হজ ভিসার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে আরও ১১৯ হজযাত্রীকে। তাদের অভিযোগ, জটিলতা কাটিয়ে কবে, কখন তাদের ফ্লাইট হবে তা বলতে পারছে না হজ অফিস। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেছেন, ২৬ আগস্ট আটকে যাওয়া ১১৯ জনকে নিয়ে বিমানের একটি ফ্লাইট ঢাকা ছেড়ে যাবে। বিমানের আশকোনা হজ অফিসের পরিচালক ড. আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ভিসাসংক্রান্ত যে জটিলতা ছিল সৌদি দূতাবাসের সহযোগিতায় তা কেটে গেছে। যেসব যাত্রীর এর আগে ফ্লাইট মিস হয়েছে তাদের পরবর্তী ফ্লাইটে ভাগ করে পাঠানো হচ্ছে। এখন আর কোনো সমস্যা নেই। এ সময় আল ইসলাম হজ এজেন্সির মালিক মাওলানা খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমার এজেন্সির ১৮৯ হজযাত্রীর ফ্লাইট রিশিডিউল দেওয়া হয়েছে ২২ আগস্ট। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটি ভিসাও হাতে আসেনি। ভিসার জন্য হজ পরিচালকের আধাসরকারি পত্রের অপেক্ষায় আছি। এ অবস্থায় ২২ আগস্টের ফ্লাইট বাতিলের আবেদন ও ২৪ আগস্ট নতুন করে ফ্লাইট শিডিউল চেয়ে ব্যাংক ড্রাফট করেছি।’ অন্য হজ এজেন্সি শরীয়তপুর ট্রাভেলসের পরিচালক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘৫০ জনের জন্য সৌদি দূতাবাসে ভিসার আবেদন করেছি। এখনো ভিসা পাইনি। শনিবার (আজ) বেলা ২ টা ২০ মিনিটে ফ্লাইট। জানি না নির্ধারিত ফ্লাইটে আমার হজযাত্রীরা যেতে পারবেন কি না।’ এদিকে বারকোড ভিসা নিয়ে নতুন করে জটিলতা শুরু হয়েছে। ১০০ জনের নিচে হলে বারকোড ভিসা হচ্ছে না। এ কারণে অনেক এজেন্সি সমস্যায় পড়েছে। জটিলতার বিষয়টি সুরাহা করতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এজেন্সির প্রতিনিধি ও হাব নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। তবে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর