শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা
মালয়েশিয়ায় অপহরণ

নারায়ণগঞ্জে নারীসহ ৭ জন গ্রেফতার

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ফয়েজ আহম্মেদকে অপহরণের ঘটনায় র‌্যাব-১১-এর সদস্যরা অপহরণকারী দলের মূল হোতা লোকমানের স্ত্রীসহ সাতজনকে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার করেছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণের ১৪ লাখ ৯৯ হাজার ৮১৪ টাকা উদ্ধার করা হয়। গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে র‌্যাব-১১-এর সদর দফতরে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-১১-এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। যারা গ্রেফতার হয়েছেন তারা হলেন অপহরণকারী দলের মূল হোতা লোকমানের স্ত্রী শাকিলা আক্তার (৩০), আরেক অপহরণকারী জনির মা মাহমুদা পারভীন (৫০), লোকমানের বোন আলেয়া বেগম (৪৫), লোকমানের ভগ্নিপতি আবুল কালাম আজাদ (৫২), লোকমানের ভাগ্নে আল-আমিন আসিক (২৬), আলেয়ার উকিল ভাই আবদুল্লাহ (৩৬) ও হুন্ডি ব্যবসায়ী আওলাদ হোসেন (৩০)। প্রেস ব্রিফিংয়ে লে. কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান জানান, ২৩ জুলাই ঢাকার দক্ষিণখান এলাকার ব্যবসায়ী ফয়েজ আহম্মেদ (৬৬) ব্যবসায়িক কাজে মালয়েশিয়া যান। ওই দিন সকালেই অজ্ঞাতনামা তিন-চার জন তাকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান। তারা দীর্ঘদিন ফয়েজ আহম্মেদকে আটক করে নানাভাবে নির্যাতন চালান। অপহরণের মূল হোতারা হলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম দেওভোগ কাশিপুর বাংলাবাজারের খোকনের ভাইয়ের বাড়ির ভাড়াটিয়া ও মৃত হাতেম আলীর ছেলে লোকমান হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পশ্চিম কুট্রাপাড়া জোড়াসার বাসিন্দা মো. ইসহাকের ছেলে ফখরুদ্দীন আলী আহমেদ জনি ও মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার পানিয়ার বাসিন্দা মো. আবদুল মান্নান শেখের ছেলে মো. শরিফ। তারা এখন মালয়েশিয়াপ্রবাসী। তাদের সঙ্গে একজন মালয়েশিয়ানও জড়িত আছেন। এরপর অপহরণকারীরা বাংলাদেশে ফয়েজ আহম্মেদের পরিবারের কাছে তার মুক্তিপণ হিসেবে ১ কোটি টাকা দাবি করেন। পরে ফয়েজ আহম্মেদের পরিবার বাধ্য হয়ে অপহরণকারীদের কথামতো মূল হোতা লোকমানের স্ত্রী শাকিলার কাছে নগদ ১৩ লাখ টাকা পৌঁছে দেন। পরে অপহরণকারীর আত্মীয়স্বজনদের কাছে ব্যাংকের মাধ্যমে দুবারে ১৫ লাখসহ মোট ২৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ হিসেবে প্রদান করেন। পরে মুক্তিপণের টাকা পেয়ে ফয়েজ আহম্মেদকে অপহরণকারীরা ছেড়ে দেন। অপহরণকারীদের কবল থেকে ছাড়া পেয়ে ১৯ আগস্ট ফয়েজ আহম্মেদ বাংলাদেশে ফিরে আসেন। তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। র‌্যাব আরও জানায়, ১৬ আগস্ট অপহৃতের পরিবার র‌্যাব-১১ কার্যালয়ে এসে অপহরণের বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর তারা গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি আসামিদের ব্যাপারে খোঁজখবর ও ব্যাংক লেনদেনের বিষয়গুলো নিশ্চিত হয়। বুধবার ও বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও মুন্সীগঞ্জ থেকে অপহরণকারীদের মূল হোতা লোকমান হোসেনের স্ত্রী, আত্মীয়স্বজনসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হওয়াদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৪ লাখ ৯৯ হাজার ৮১৪ টাকা উদ্ধার করা হয়। র‌্যাব সদস্যরা গ্রেফতার শাকিলার কাছ থেকে ছয়টি পাসপোর্ট ও কিছু সার্টিফিকেট উদ্ধার করেন। এর মধ্যে দুটি পাসপোর্ট লোকমানের, একটি শাকিলার, বাকি তিনটি অন্যদের। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে নয়টি মোবাইল ফোন সেট, ১১টি সিম কার্ড, ক্রেডিড কার্ড ও ব্যাংকের চেকবইসহ অন্যান্য কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।

সর্বশেষ খবর