বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

‘যা নেই ভারতে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘যা নেই ভারতে’

মহাভারতের কাহিনী অবলম্বনে বর্তমান সময়কে ধারণ করে কণ্ঠশীলনের নাটক বিভাগ মঞ্চায়ন করেছে ভিন্নধর্মী নাটক ‘যা নেই ভারতে’। গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় এ নাটক। নাট্যকার, নির্দেশক, অভিনেতা মনোজ মিত্র রচিত নাটকের নির্দেশনায় ছিলেন কণ্ঠশীলন প্রশিক্ষক মীর বরকত।

মহাভারত আশ্রয় করে রচিত হলেও ‘যা নেই ভারতে’ নাটকে নাট্যকার গোটা ঘটনাপ্রবাহকে একটু অন্যভাবে বর্ণনা করতে চেয়েছেন। কুরুবংশের রানী তথা হস্তিনাপুরির রাজবাড়ির বধূদের কেউ স্বেচ্ছায় মাল্যদান করেনি। ভীষ্ম যুদ্ধ করে তার ভাই বিচিত্রবীর্যের হাতে তুলে দেন দুই নারী অম্বিকা ও অম্বালিকাকে। কারণ তিনি বিবাহ করবেন না। কিন্তু ভাই তরুণ বয়সে মারা যান। দেখা দেয় অস্তিত্ব সংকট বংশরক্ষায়। ভীষ্ম অম্বিকাকে অনুরোধ করেন পুত্রসন্তান ধারণ করতে। অম্বিকার আকাক্সক্ষা তিনি ভীষ্মের সন্তানের মা হতে চান। ভীষ্মের বক্তব্য প্রতিজ্ঞাভ্রষ্ট হবেন না। নারীকে সেই পুরুষের ইচ্ছার কাছে নতজানু হতে হয়। ব্যাসদেবের সঙ্গে অম্বিকার বলপূর্বক মিলন হয়। সে মিলনে ব্যাসদেবের প্রতি না তাকানোয় জম্নহয় অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের। অম্বালিকার সঙ্গে মিলনে জম্ননেন পাণ্ডু। দাসীর গর্ভে জš§ান বিদুর। ব্যাসদেব এদের সবার পিতা। পরবর্তী সময়ে পাণ্ডুর পুরুষত্বহীনতা ও বনবাসের সিদ্ধান্ত, গান্ধারির জরায়ু বিনষ্টকরণ, এসবের ফলে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় আবিভর্‚ত হন ঘোর তামাসাবৃত জš§কথার পঞ্চপাণ্ডব। এসব মাতা, পুত্রদের আশা-আকাক্সক্ষা, জয়-পরাজয়, দর্শনের বিরোধ ও বৈপরীত্য নিয়েই ‘যা নেই ভারতে’।

বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন : আবদুর রাজ্জাক, এ কে এম শহীদুল্লাহ কায়সার, সোহেল রানা, সালাম খোকন, অনন্যা গোস্বামী, জে এম মারুফ সিদ্দিকী, নিবিড় রহমান, কামরুল হাসান, রাজিয়া সুলতানা মুক্তা, তনুশ্রী গোস্বামী, নাজনীন আক্তার শীলা প্রমুখ। মঞ্চসজ্জা ও আলোক নির্দেশনায় ছিলেন জুনায়েদ ইউসুফ। সংগীত পরিচালনা করেন অসীম কুমার নট্ট। নাটকের দুটি গানের কথা লিখেছেন এ এফ আকরাম হোসেন এবং কণ্ঠ দিয়েছেন হানিফ মোহাম্মদ রতন। অন্যদিকে একই সময়ে জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় অঙ্গীকার নাট্যদল প্রযোজিত নাটক ‘এক তারা’। তারা নামের একজন সহজ-সরল মানুষের জীবন সংগ্রামের নানা বিষয় নিয়ে বিন্যস্ত হয়েছে নাটকের কাহিনী। সুমন কাঞ্জিলাল রচিত ও রাজীব রেজা নির্দেশিত ‘এক তারা’র বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেনÑ রাজীব রেজা, আইরিন শ্রাবণী, সঞ্চিতা, কবির, মনিরা মনি, শামীমা আক্তার মুক্তা প্রমুখ।

লালন ও আব্বাসউদ্দীন স্মরণে লোক সংগীত পরিষদ : কথামালা ও সংগীতের মধ্য দিয়ে ফকির লালন শাহ ও মরমী শিল্পী আব্বাসউদ্দীনকে স্মরণ করেছে বাংলাদেশ লোক সংগীত পরিষদ। লালন সাঁইজির ২৪১তম জš§বার্ষিকী ও আব্বাসউদ্দীনের ১১৪তম জš§বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে হয় এ আয়োজন। লালনের ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ পাবি’ আব্বাসউদ্দীনের ‘নাও ছাড়িয়া দে পাল উড়াইয়া দে’ এ দুটি গানের সমবেত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে স্মরণানুষ্ঠানের সূচনা ঘটে। লালন ও আব্বাসউদ্দীনের গানের একক পরিবেশনায় অংশ নেনÑ সোমা সরকার, আবদুল আজিজ, ফাইরুজ নাওয়ার কাঁকন, অনঙ্গ মোহন রাজবংশী, নাসরীন হায়াত, হরিমঙ্গল দাশ, নাসরিন ফেরদৌস চমন, সেলিনা আলম, সাবিনা ইয়াসমিন।

‘যেখানে সাঁই বারামখানা, মানুষ গুরু নিষ্ঠা যার, গুরু পদে নিষ্ঠা মন যার হবে, আমার ঘরখানায় কে, তিন পাগলে হলো মেলা ও মন গুরু ভজরে সাঁইজির অমিয় বাণীর কথা-সুরের এমন গানে মিলনায়তন হয়ে উঠে লালনময়। লালনের পরিবেশনার ফাঁকে ফাঁকে পরিবেশিত হয় মরমী শিল্পী আব্বাসউদ্দীনের ‘আমার হাড় কালা করলামরে, আমায় এতো রাতে কেন ডাক দিলি, ওরে ও পরানের মাঝি, যার আপন খবর, ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দেরে ইত্যাদি গানগুলো। এর আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তৃতা করেন লালন সম্রাজ্ঞী ফরিদা পারভীন ও নজরুল গবেষক সংগীত শিল্পী ড. নাশিদ কামাল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর