রবিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা
জাপানি নাগরিক হত্যা

পরিকল্পনাকারীর খোঁজে পুলিশ, ওসি বদলি

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিন খুনিকে শনাক্ত করার পর এখন মূল পরিকল্পনাকারীকে খুঁজছে পুলিশ। হত্যা মামলার আসামি হুমায়ুন কবীর হীরাকে দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে  নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তিন খুনির পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীর সন্ধানে নেমেছে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মামুনুর রশীদ মামুন জানান, খুনিরা শনাক্ত হয়েছে। এখন মূল পরিকল্পনাকারীর সন্ধান চলছে। মূল পরিকল্পনাকারীকে শনাক্ত করতে আসামি হীরাকে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এর আগে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। এদিকে কোনিও হত্যা মামলার বাদী কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিমকে গতকাল আকস্মিকভাবে রংপুরের পীরগঞ্জ থানায় বদলি করা হয়েছে। তার স্থানে দায়িত্ব দেওয়া হয় এ বি এম জাহিদুল ইসলামকে। অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রাবস্থায় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা ওসি রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে কোনিও হত্যাকাণ্ড নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে। এ কারণে তাকে বদলি করা হয়। তবে পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে শুধু বলেন, নিয়মিত বদলির অংশ হিসেবে তাকে পীরগঞ্জ থানায় বদলি করা হয়েছে। কাউনিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। নগরীর মুন্সিপাড়ায় জাকারীয়া বালা নামে যে ব্যক্তির বাড়িতে হোশি ভাড়া ছিলেন, তার শ্যালক হুমায়ুন কবীর হীরা ও মহানগর বিএনপির সদস্য রাশেদ-উন নবী খান বিপ্লবকে গ্রেফতার করে এ মামলায় আসামি করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। প্রথম রিমান্ড শেষে হীরাকে দ্বিতীয় দফায় ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। তবে বিপ্লবকে রিমান্ডে নেওয়ার চারদিনের মাথায় রিমান্ড বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়।  অপরদিকে কোনিওকে দাফন করার পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও তার কবর এখনো সার্বক্ষণিক পাহারা দিচ্ছে পুলিশ। তিন সদস্যের পুলিশ দল পালাক্রমে কবরটি পাহারা দিচ্ছে। বিষয়টি স্পর্শকাতর বলেই কবর পাহারা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার। খুন হওয়ার দশ দিন পর ১২ অক্টোবর গভীর রাতে ব্যাপক গোপনীয়তার মধ্যে কোনিওকে নগরীর মুন্সিপাড়া কবরস্থানে দাফন করে স্থানীয় প্রশাসন। চলতি বছরের ১৫ জুলাই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া নাম নিয়েছিলেন কোনিও।

হীরা ও বিপ্লব ছাড়াও কোনিও হত্যার ঘটনায় রংপুর, পাবনা ও রাজশাহী থেকে দুই ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আরও ছয়জনকে আটক করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জাকারীয়া বালা, রিকশাচালক মোন্নাফ আলী ও যে বাড়ির সামনে নিহত হন কোনিও সেই বাড়িওয়ালার ছেলে মুরাদ হোসেনকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। জাকারীয়া বালার বাড়িতে ভাড়া থেকেই কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের আলুটারি গ্রামে জাপানি কয়েল ঘাসের খামার করেছিলেন কোনিও। পাশেই জাকারীয়া বালার শ্যালক হীরার মাছের খামার।

সর্বশেষ খবর