রবিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

যুক্তরাষ্ট্রের বন্দীশিবিরে অনশনে ৪৪ বাংলাদেশি

প্রতিদিন ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের এল পাসো ডিটেনশন সেন্টারে অবস্থানরত ৬৪ বাংলাদেশির মধ্যে ৪৪ জন অনশন ধর্মঘট শুরু করেছেন ১৪ অক্টোবর সকাল থেকে। দেশটিতে বসবাসের অনুমতি প্রদানের পরিবর্তে তাদের বহিষ্কারের  নির্দেশ জারির পরই তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইমিগ্র্যান্টদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দেশিজ রাইজিং আপ অ্যান্ড মুভিংয়ের (ড্রাম) কমিউনিটি অর্গানাইজার কাজী ফৌজিয়া।

ন্যাশনাল ল’ইয়ার গিল্ড ও নো ওয়ান মোর ডিপোরটেশন নামক দুটি সংস্থার পক্ষ থেকে অনশনরতদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলেও ১৬ অক্টোবর গভীর রাতে কাজী ফৌজিয়া জানান। এদিকে ওই ডিটেনশন সেন্টার থেকে অনশনরত মাহবুবুর রহমান টেলিফোনে এনআরবি নিউজকে বলেন, ‘অনশনরতদের মধ্যে শামসুদ্দিন নামক একজনের অবস্থা শোচনীয় হওয়ায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অন্যদের নানা লোভ দেখানো হচ্ছে অনশন ভঙ্গ করার জন্য। কিন্তু আমরা ডিপোরটেশনের নির্দেশ (বহিষ্কারের আদেশ) প্রত্যাহার এবং অ্যাসাইলামের আবেদন মঞ্জুর না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’ মাহবুব আরও উল্লেখ করেন, ‘ছয় মাসের বেশি সময় ধরে আমরা এ সেন্টারে আছি। সবাই রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছি। কারও আবেদনই গ্রাহ্য করা হচ্ছে না। অধিকন্তু আমরা যারা বিএনপির কর্মী বা সংগঠক হিসেবে আবেদন করেছি, তারা সবাই নাকি সন্ত্রাসী- এমন মন্তব্য করেছেন ইমিগ্রেশন কোর্টের জজ। এ কারণে আমাদের সবাইকে অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ জারি হয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে নিউইয়র্কের খ্যাতনামা অ্যাটর্নি অশোক কর্মকার এনআরবি নিউজকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি-জামায়াত শিবিরকে সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট। ইমিগ্রেশন কোর্টের জজদের কাছে রয়েছে এ ধরনের নির্দেশনা।’ অশোক কর্মকার বলেন, ‘দলগতভাবে বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। তাই বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের ঢালাওভাবে সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা বা চিহ্নিত করার অবকাশ নেই বলে আমি মাননীয় আদালতে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করে নিউজার্সির একটি ইমিগ্রেশন কোর্টের জজ কর্তৃক সেই ভ্রান্ত ধারণার বিরুদ্ধে একটি রুলিংও আদায় করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া, আরিজোনা অঙ্গরাজ্যের জজরা সেই রুলিংকে পাত্তা দিচ্ছেন না।’ অনশনরত মাহবুব বলেন, ‘একেকজন প্রায় ২৫ লাখ টাকা করে দালালকে দিয়ে বিভিন্ন দুর্গম পথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রে এসে এমন কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হলো। আমরা কোথায় ফিরে যাব। দেশে ফিরলে তো জীবন বিপন্ন। তাই অনশনের মধ্য দিয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গনের কথা ভাবছি। আমরা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি অনশনে যাওয়ার কথা।’ এদিকে স্থানীয় সময় ১৭ অক্টোবর দুপুরে এল পাসো ডিটেনশন সেন্টারের সামনে ড্রাম ও ন্যাশনাল ল’ইয়ার গিল্ডের যৌথ উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর