প্রয়াত সচিব কামরুল ইসলাম সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের গ্রামীণ উন্নয়ন অবকাঠামোর পথিকৃৎ। এ ছাড়া তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন প্রাইভেটাইজেশন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে। ছিলেন ঢাকা যানবাহন সমন্বয় বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক। দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে কামরুল ইসলাম সিদ্দিক ছিলেন পুরোধা পুরুষ। প্রায় সাত বছর আগে তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তবুও তাকে রেহাই দিচ্ছে না দুদক। এমন একজন গুরুত্বপূর্ণ ক্লিন ইমেজের ব্যক্তির বিষয়ে ভালোভাবে না জেনেই পুরনো অভিযোগে নতুন করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিল দুদক। অথচ মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের অনুসন্ধান করার নিয়ম নেই দুদকের। দুদকের অনিষ্পন্ন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনার আদেশে এ সম্পর্কিত অনুসন্ধান শুরু হয় গত ৪ অক্টোবর থেকে। তবে দুদকের এমন সিদ্ধান্তকে অনিচ্ছাকৃত ভুল বলছেন দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান। তিনি গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দুদক কোনো মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করে না। এমনকি অনুসন্ধান পর্যায়ে অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তি মারা গেলেও অভিযোগের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। কামরুল ইসলাম সিদ্দিক ২০০৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অথচ তার বিরুদ্ধে অন্যদের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে কম্পিউটার সরবরাহসহ জনবল নিয়োগের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদক সূত্র আরও জানায়, ২০০১ সালে বিলুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে এমন অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন অভিযোগটি দুদকের অনিষ্পন্ন সেল-১ এর ফাইলবন্দী অবস্থায় ছিল। এরপর চলতি মাসের ৪ অক্টোবর কমিশন থেকে অভিযোগটি নতুন করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুদকের উপ-পরিচালক এস এম মফিদুল ইসলামকে। প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিকের মারা যাওয়ার বিষয়টি প্রাইভেটাইজেশন বোর্ড থেকেও দুদককে নিশ্চিত করা হয়েছে। কামরুল ইসলাম সিদ্দিক ১৯৯২ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) প্রথম প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব পান। এ পদে থেকে তিনি গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। তাকে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের স্বপ্নদ্রষ্টা বলা হয়। এরপর তিনি ১৯৯৯ সালের মে মাসে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে যোগ দেন। ২০০০ সালের প্রথম দিকে তিনি পূর্ত সচিব ও ২০০১ সালের দ্বিতীয়ার্ধে প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে যান তিনি।