বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা
অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের কক্ষে কক্ষে তল্লাশি

মংলা বন্দরে নিয়োগ বাণিজ্য তদন্তে নেমেছে বিভিন্ন সংস্থা

বাগেরহাট প্রতিনিধি

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ৩২টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কয়েক কোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ সম্পর্কে সরকারের একাধিক সংস্থা তদন্তে নেমেছে। এদিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অর্থ বাণিজ্যের কারণে বন্দরের সাধারণ কর্মচারী ও নিয়োগ প্রত্যাশীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

মংলা বন্দর সূত্র জানায়, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন কম্পিউটার অপারেটর (মুক্তিযোদ্ধা কোটা) পদে ১৪, ইলেকট্রিশিয়ান গ্রেড-১ পদে ১, ইলেকট্রিশিয়ান গ্রেড-২ পদে ১, কার্পেন্টার অপারেটর (মেশিন) পদে ১, পাম্প ড্রাইভার পদে, গ্রিরার পদে ৩, ক্রেন ফিটার পদে ১ জনসহ বিভিন্ন পদে ৩২ জন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে আবেদনকারীদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে। লিখিত পরীক্ষা শেষে ১০ অক্টোবর থেকে তিন দিন মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের পর থেকেই অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে বন্দরের একটি সিন্ডিকেট তৎপর হয়ে ওঠে। এ সিন্ডিকেটটি চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে প্রতিটি পদের বিপরীতে ৭ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা চুক্তি করে ফেলে। চুক্তি অনুযায়ী সিন্ডিকেট সদস্যরা প্রার্থীদের কাছ থেকে আগাম হিসেবে অর্ধেক টাকা গ্রহণ করে। বাকি টাকা নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়ার পর নেওয়ার কথা। এ বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে বন্দরের বিভিন্ন দফতরে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রবিবার বন্দরের সদস্য (অর্থ), পরিচালক (ট্রাফিক), প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও প্রধান নিরীক্ষা কর্মকর্তাসহ চার সদস্যের একটি দল ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ওহিউদ্দিন চৌধুরী, সহকারী ব্যবস্থাপক আবুল বাশারত, অর্থ হিসাবের ভারপ্রাপ্ত প্রধান সিদ্দিকুর রহমানসহ কয়েকজনের কক্ষে তল্লাশি চালান। মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বন্দরের নিয়োগ নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠার পর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। এক কর্মকর্তার কাছ থেকে টাকা উদ্ধারের গুজব ওঠার পর আরও কিছু কর্মকর্তার কক্ষে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের অর্থ’ আছে বলেও অভিযোগের পর তাদের কক্ষে তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু কোনো কিছুই পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, বিষয়টি অপপ্রচার হলেও বন্দরের সুনাম রক্ষার জন্যই তৎক্ষণাৎ তল্লাশি চালানো হয়। তিনি আরও বলেন, কম্পিউটার অপারেটরের ১৪টি পদ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় রয়েছে। এ পদে নিয়োগ পেতেই বেশি তদবির হচ্ছে।

এদিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠার পর বন্দরের সাধারণ কর্মচারী ও নিয়োগপ্রত্যাশীদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার তদন্তে সরকারের একাধিক সংস্থা ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেছে।

সর্বশেষ খবর