শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

চোখের জলে দেবীকে বিদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

চোখের জলে দেবীকে বিদায়

শারদীয় দুর্গোৎসব : শেষ হলো পাঁচ দিনের শারদীয় দুর্গোৎসব। রাজধানীর বুড়িগঙ্গা (১), কক্সবাজারে সাগরে (২) ও বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে (৩) গতকাল প্রতিমা বিসর্জন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

চোখের জলে মা দুর্গাকে বিদায় দিলেন ভক্তকুল। বিসর্জনের মধ্য দিয়ে গতকাল কৈলাসে স্বামীগৃহে ফিরে গেলেন দেবী। এক বছর পর আবার তার ভক্তদের মাঝে পিতৃগৃহে ফিরে আসবেন। হিন্দু পঞ্জিকামতে, দুর্গা মা এবার ঘোড়ায় চড়ে এসেছেন আর গেলেন পালকিতে চড়ে। আর দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। বৃহস্পতিবার যদিও বিহিত পূজা আর দর্পণ বিসর্জনের মাধ্যমে দুর্গাপূজার শাস্ত্রীয় সমাপ্তি হয়, তবে পূজা উদ্যাপন পরিষদের সিদ্ধান্তে গতকাল দেবীর বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়।

গতকাল বেলা আড়াইটা থেকে বুড়িগঙ্গার ওয়াইজঘাটের বীণা স্মৃতি স্নানঘাটে আদি মরণচাঁদ, নবকল্লোল পূজামণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে রাজধানীতে দেবীকে বিদায় জানানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তবে বুড়িগঙ্গা ছাড়াও তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।

এর আগে সকাল থেকে ঢাকার মন্দিরে মন্দিরে হিন্দু বিবাহিত নারীরা সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। পাঁচ দিনের এ শারদীয় উৎসবে ভক্তরা শুরুর চার দিন আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠলেও শেষ দিনে মাকে বিদায় জানাতে গিয়ে বিষণœ হয়ে পড়েন।

রাজধানীতে বিকাল সাড়ে ৩টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের মেলাঙ্গন থেকে দেবী বিসর্জনের শোভাযাত্রা শুরু হয়। দুপুরে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে বড় ট্রাকের পাশাপাশি ছোট পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্ন যানে করে ভক্তরা দলে দলে প্রতিমাসহ পলাশীর মোড়ে জড়ো হতে থাকেন। এ সময় তারা শঙ্খ, উলুধ্বনি, খোল-করতাল-ঢাকঢোল এবং সাউন্ড সিস্টেমে গান বাজিয়ে আনন্দ শোভাযাত্রা করেন। পরে পলাশী থেকে পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে বুড়িগঙ্গা তীরে শেষ হয় শোভাযাত্রা। প্রতিমা ঘাটে নিয়ে আসার পর ভক্তরা শেষবারের মতো ধূপধুনা দিয়ে আরতিতে মেতে ওঠেন। শেষে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্য দিয়ে নৌকায় তুলে দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দেওয়া হয়। বিকাল ৫টার পর শুরু হয় দেবীর বিসর্জন। বিসর্জনের আগে সকাল থেকেই রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন, বনানীসহ বিভিন্ন মণ্ডপে দেবী দর্শন করেন ভক্তরা। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি সূত্রে জানা যায়, ঢাকার বিভিন্ন ঘাটে এবার ২২৫টি মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় সাংবাদিকদের জানান, প্রতিমা বিসর্জন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি নৌপুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরাও দায়িত্বে ছিলেন। ১৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী থেকে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর একে একে মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়া দশমী শেষে গতকাল বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর