সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড ছাড়াই নতুন বেতন আদেশ

গেজেট নভেম্বরে ফেরত দিতে হবে সব সুবিধা

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মেনে কোনো ধরনের পরিবর্তন ছাড়াই নতুন বেতন আদেশ চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। গত বৃহস্পতিবার এর খসড়া ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ভেটিং সাপেক্ষে আসছে নভেম্বরে এ বিষয়ে গেজেট জারি হবে। তবে নতুন বেতন কার্যকর হবে গত জুলাই থেকে।

জানা গেছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি সত্ত্বেও টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আসেনি বেতন আদেশে। উপরন্তু গেজেট জারি হওয়ার পর গত জুলাই থেকে পরবর্তী যেসব মাসের বেতন-ভাতা তোলা হয়েছে, সেখান থেকে প্রাপ্ত সুবিধা ফেরত দিতে হবে সরকারকে। এই প্রাপ্য সুবিধার মধ্যে টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড এবং মহার্ঘ ভাতার অর্থ রয়েছে।

সূত্রগুলো আরও জানায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভা যে বেতন কাঠামো অনুমোদন করেছে, সে অনুযায়ী বেতন আদেশ চূড়ান্ত করেছে অর্থ বিভাগ। তবে সেখানে একটি ইস্যু সংযুক্ত করে বলা হয়েছে- সিলেকশন গ্রেড, টাইম স্কেল, বেতন-ভাতাদি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা যেগুলো চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে গেজেট (বেতন আদেশ) জারি পর্যন্ত প্রদান করা হয়েছে, সেগুলো রহিত করা হচ্ছে। এই ইস্যুটি নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আবারও অসন্তোষ দেখা দিতে পারে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব     মাহবুব আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘মন্ত্রিসভায় যা সিদ্ধান্ত হয়েছে সে অনুযায়ী বেতন আদেশ, ২০১৫ চূড়ান্ত করা হয়েছে। আমরা কোনো ধরনের পরিবর্তন আনিনি।’ পাঁচ মাসের প্রাপ্য সুবিধা ফেরত নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নতুন বেতন যেহেতু গত জুলাই থেকে কার্যকর হচ্ছে, সে কারণে ওই পর্যন্তই আগের বেতন কাঠামোর সুবিধা ভোগ করা যাবে। আপনি একসঙ্গে দুটি বেতন কাঠামোর সুবিধা ভোগ করতে পারেন না।’ তবে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি- সামনের মাসে গেজেট জারি হওয়া সাপেক্ষে গত জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসের বেতন-ভাতা প্রাপ্য হন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ওই পাঁচ মাসের বেতনের সঙ্গে প্রাপ্য সুবিধাই ফেরত দিতে হবে সরকারকে, যা সংবিধান ও মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্তের পরিপন্থী। মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্তে বলা আছে- জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ অনুযায়ী উল্লিখিত সুবিধাদি এবং সিলেকশন গ্রেড, উচ্চতর স্কেল ও টাইম স্কেল বেতন আদেশ ২০১৫ জারি পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। যেহেতু নভেম্বরে বেতন আদেশ জারির কথা রয়েছে তাই সে পর্যন্ত সুবিধা পাওয়ার কথা। এখন নতুন বেতন কাঠামো জুলাই থেকে কার্যকর দেখিয়ে প্রাপ্ত সুবিধা কেটে নেওয়া ওই সিদ্ধান্তের পরিপন্থী। এ ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য যেসব সুবিধা জারি করা হয়েছে, সেগুলো নতুন বেতন আদেশ দ্বারা ভূতাপেক্ষভাবে বন্ধ করা সংবিধানের মৌল নীতির পরিপন্থী বলেও উল্লেখ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের দাবি- সংবিধানে বলা আছে, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের প্রাপ্ত পারিশ্রমিক, বিশেষ সুবিধা এগুলো রহিত করা যাবে না। সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার টাকা ও সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ টাকা নির্ধারণ করে নতুন বেতন কাঠামো গত ৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়। এর প্রায় দেড় মাস পর বেতন আদেশের খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলো।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর