সোমবার, ২ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
প্রকাশ্যে সশস্ত্র মহড়া

এক ছাত্রলীগেই অস্থির চট্টগ্রাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

এক ছাত্রলীগেই অস্থির চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সদর দফতর সিআরবির সামনে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গতকাল যুবলীগের দুই পক্ষে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় অস্ত্রের সমাগম দেখা যায় । - বাংলাদেশ প্রতিদিন

ছাত্রলীগেই অস্থির হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চলছে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে ম্যাজিস্ট্রেট ও শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা, ফুটপাথের দখল-বেদখল নিয়ে সংঘর্ষ, রেলের টেন্ডার নিয়ে সিআরবিতে দফায় দফায় সংঘর্ষসহ নানা ঘটনায় অস্থির হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম।  

গতকাল দুপুরে রেলওয়ের সিআরবিতে অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবলীগ নেতা বাবরের অনুসারী ও ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা লিমনের অনুসারীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি, সংঘর্ষ, প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া ও ফাঁকা গুলিবর্ষণে বাবর অনুসারী যুবলীগ কর্মী জামশেদ, রাকিব হোসেন, হানিফ, হানিফ (২), হৃদয় ও রিংকুসহ ৭ জন আহত হন। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর নাসিরাবাদ সরকারি বালক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কের ফুটপাথ দখল নিয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে অর্ধশত দোকান ভাঙচুর হয়। উভয় গ্রুপই দেয় প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে জোরপূর্বক কেন্দ্রে প্রবেশ করে প্রশ্নপত্রের ছবি তোলার চেষ্টা করেন নগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি নোমান চৌধুরী। এ সময় বাধা দিলে লাঞ্ছিত করেন ম্যাজিস্ট্রেট ও শিক্ষককে। গতকাল রবিবার তাকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। নগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি বলেন, সিটি কলেজের ঘটনায় জড়িত থাকায় নোমান চৌধুরীকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সিআরবিতে ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে টেন্ডারবাজি করা লিমনকে সংগঠন থেকে আগেই বহিষ্কার করা হয়েছে। নাসিরাবাদের ঘটনায় ছাত্রলীগের কোনো নেতা-কর্মী ছিল না। কোনো অপকর্মে জড়িত কাউকে ছাত্রলীগ প্রশ্রয় দেবে না। কেউ অভিযুক্ত হলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। জানা যায়, গতকাল সিআরবিতে লিমন গ্রুপের কর্মী বাবুকে মারধর করে বাবর অনুসারীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাতরাস্তার মোড়ে দুই গ্রুপের অনুসারীরা মুখোমুখি হয়। এ সময় লিমনের গ্রুপের মামুনের নেতৃত্বে কয়েকজন রড, কিরিচ নিয়ে ধাওয়া দিয়ে প্রায় ৬ রাউন্ড গুলি ছোড়ে বাবর অনুসারীদের দিকে। এতে পাল্টা আক্রমণ করতে মুখোমুখি অবস্থান নেয় বাবর অনুসারীরা। এ সময় বাবর ও লিমন উপস্থিত ছিলেন না। এর আগে ১২ অক্টোবরও সিআরবিতে উভয় গ্রুপের মধ্যে ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ তিনজন আহত হন। ২০১৩ সালের ২৪ জানুয়ারি সিআরবিতে প্রকাশ্য রক্তক্ষয়ী সংঘাতে দুজন নিহত হন। এ দুই ঘটনায় নগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি একরামুল হক রাসেলসহ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ সময় নগর ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি মিতুন মল্লিক ও রাহুল বড়ুয়াসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা লিমনের পক্ষে সভা-সমাবেশ করেছেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে। এতে সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী সমাবেশও করেছেন বাবর সমর্থিত সাবেক ছাত্রনেতারা শহীদ মিনার চত্বরে। কোতোয়ালি থানার ওসি জসিমউদ্দিন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে র‌্যাব ও পুলিশের উপস্থিতিতে ছত্রভঙ্গ হয়ে উভয়পক্ষ চলে যায়। পুলিশ পরিত্যক্ত দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ আলাউদ্দিন নামের একজনকে আটক করে। রেলের পূর্বাঞ্চলের জিএম মকবুল আহম্মদ বলেন, বাইরে কী হয়েছে সেটি আমি জানি না। রেল অঙ্গনের ভিতরে কোনো অপরাধ কর্মকাণ্ড এড়ানোর জন্য দায়িত্বশীলদের নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ রয়েছে।

 

 

সর্বশেষ খবর