বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

রেড নিরাপত্তায় দেশ

বিমানবন্দর, কারাগার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বিশেষ নজরদারি

আনিস রহমান

রেড নিরাপত্তায় দেশ

নিরাপত্তা জোরদারের পর গতকাল সিলেট এমএজি ওসমানী বিমানবন্দরে ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি চালায় বিজিবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

জঙ্গি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কায় দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ সব কটি বিমানবন্দর, ৬৮টি কারাগার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। স্পর্শকাতর স্থাপনার নিরাপত্তা পুনর্বিন্যাস কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গতকাল  সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ- বিজিবির ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার দুপুর থেকে চট্টগ্রামে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিজিবির ডগ স্কোয়াডের সহায়তায় তল্লাশি কার্যক্রম শুরু হয়। ঢাকায় হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে তল্লাশি কার্যক্রম শুরু হয় বেশ কিছু দিন আগেই।

বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ জানান, বিজিবির ডগ স্কোয়াডে ৪৭টি প্রশিক্ষিত বিদেশি কুকুর আছে। এরা বিস্ফোরক, মাদক ও ক্ষুদ্র অস্ত্র শনাক্ত করতে পারদর্শী। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বিজিবির ডগ স্কোয়াড কাজ শুরু করেছে।

সরকার বিমানবন্দরের পাশাপাশি ৬৮টি কারাগারেরও নিরাপত্তাব্যবস্থায় পরিবর্তন এনেছে। আগের নিরাপত্তাব্যবস্থাকে বিশ্লেষণের পর নিরাপত্তার নতুন ছক তৈরি করে সে অনুযায়ী এক সপ্তাহ ধরে কাজ করছে। সম্প্রতি ঢাকায় ইতালীয় নাগরিক তাভেলা সিজার, রংপুরে জাপানি হোশি কোনিও হত্যা, ঢাকায় শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলায় একজনের মৃত্যু এবং আমিনবাজারে দায়িত্বরত পুলিশের এএসআই ইব্রাহীম মোল্লাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার বিষয়টি সরকারকে ভাবিয়ে তোলে। এর মধ্যে একটি গোয়েন্দা সংস্থা বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার জন্য সরকারকে পরামর্শ দেয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা ও গোয়েন্দা তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ অক্টোবর থেকে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিকসহ সব বিমানবন্দর, ৬৮টি কারাগার ও ৪১৮টি অতিগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রাজধানীতে রমনা টেলিকমিউনিকেশন ভবন, মগবাজার টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভবন, শাহবাগ ব্রডকাস্টিং হাউস, বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন, হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, তেজগাঁও পুরান বিমানবন্দর, তেজগাঁওয়ের বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট প্রেস, সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় রেড টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, শেরেবাংলানগর ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং হাউস, মহাখালী ভূ-উপকেন্দ্র, শেরেবাংলানগর টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, গুলশান টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, কম্বাইন্ড অবজারভেটরি অ্যান্ড হাইড্রোজেন ফ্যাক্টরি ভবন, বাংলাদেশ বেতারের ট্রান্সমিটিং স্টেশন, তেজগাঁও সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর, নীলক্ষেত অটোমেটিক টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, ধানমন্ডি বিদ্যুৎ স্টেশন ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অফিসের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সদস্য সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়ানো হয়েছে।

স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়নের (এসপিবিএন) উপমহাপরিদর্শক বিশ্বাস আফজাল হোসেন জানান, তারা মূলত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় কাজ করেন। রাষ্ট্রের এ দুজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নিরাপত্তায় লোকবল না বাড়ালেও যারা আছেন তাদের আরও সতর্ক থেকে দায়িত্ব পালন করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির জানান, বেশ কিছু দিন ধরেই সব কটি কারাগারের নিরাপত্তাব্যবস্থা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে। সেখানে দায়িত্বরত পোশাকধারী কারারক্ষী, সশস্ত্র কারারক্ষীর সংখ্যা দ্বিগুণ করা হয়েছে। গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু হয়েছে বেশ জোরেশোরে। সন্দেহভাজন হাজতি ও কয়েদি এবং তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসা লোকজনের ওপরও সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর